ইঙ্গিত ছিল আগেই। নিজের রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামার কথাও বলেছিলেন তিনি। কিন্তু এত দ্রুত যে দল বদলাবেন তিনি, তা হয়তো আঁচ করতে পারেননি অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। প্রয়াত মাধবরাও সিন্ধিয়ার ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর পরের দিন বিজেপিতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের নয়া জমানার অন্যতম বড় নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।এর আগে মঙ্গলবার কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপি নড্ডার উপস্থিতিতে দলবদল করলেন গুনার মহারাজ।
দলে যোগ দেওয়ার পর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া মোদী-শাহ ও জেপি নড্ডাকে ধন্যবাদ জানান তাঁকে পরিবারকে স্বাগত করার জন্য। এরপর জ্যোতিরাদিত্য কংগ্রেস দলকে একহাত নেন। তিনি বলেন যে কংগ্রেস সময়ের সঙ্গে বদলায়নি, এখনও বাস্তব পরিস্থিতিকে অস্বীকার করে বসে আছে। এরপর তিনি বলেন যে মধ্যপ্রদেশে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছে কংগ্রেস। চাষীদের ঋণমুকুব করা হয়নি, অনেক চাষীর বিরুদ্ধে এখনও কেস চলছে বলে জানান তিনি।
জ্যোতিরাদিত্য বলেন যে তাঁর জীবনের সবচেয়ে দুই গুরুত্বপূর্ণ দিন হল- যেদিন তাঁর বাবা মারা যান ও গতকাল, যেদিন একটি নতুন পথে চলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কংগ্রেসে থেকে জনসেবা করা সম্ভব হচ্ছিল বলে জানান জ্যোতিরাদিত্য। নরেন্দ্র মোদীর হাতে দেশের ভবিষ্যত সম্পূর্ণ সুরক্ষিত বলেও জানান তিনি।
একসময় রাহুল গান্ধীর অন্যতম আস্থাভাজন, প্রাক্তন মন্ত্রী তথা একদা লোকসভায় কংগ্রেসের হুইপ জ্যোতিরাদিত্য যোগ দিলেন বিজেপিতে। হোলির দিন মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে মঙ্গলবার সকালে দেখা করেন তিনি। তাঁর কিছুক্ষণের মধ্যে ইস্তফা পাঠিয়ে দেন সোনিয়া গান্ধীর কাছে। অন্যদিকে কমলনাথ সরকারের কার্যত মৃত্যুসমন জারি করে ইস্তফা দেন ছয় মন্ত্রী সহ ১৯ জন বিধায়ক। পরে আরও তিনজন ইস্তফা দিয়েছেন। মোট সংখ্যা ৩০ ছুঁতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
বহুদিন ধরেই মধ্যপ্রদেশ রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বিধানসভায় দল জিতলেও মেলেনি কোনও পদ। এরপর গুণা থেকে লোকসভায় হেরেছেন অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে। রাজ্যে সভাপতি পদেও তাঁকে নিযুক্ত করা হয়নি। শেষপর্যন্ত রাজ্যসভা থেকেও তাঁকে টিকিট দিতে অস্বীকার করেন কমলনাথ- দিগ্বিজয় জুড়ি।
এখানেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে তাঁর।শুধু নিজেই গেলেন না, সঙ্গে করে মধ্যপ্রদেশ সরকার যাতে পড়ে যায়, তারও ব্যবস্থা করলেন। রাজনীতিতে বহু চড়াই উতরাই দেখা কমলনাথকে এই রাউন্ডে মাত দিয়ে দিলেন গুনার রাজাসাহেব।