চলতি মাসের প্রথম চারটি ট্রেডিং সেশনে ভারতীয় ইক্যুইটি বাজার থেকে প্রায় ৬,৪০০ কোটি টাকা তুলেছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে মিলেছে এই খবর। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) এবং ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এটি প্রত্যাশিত, মত বিশেষজ্ঞদের।
FPI-এর প্রবাহ মে মাসে এখনও পর্যন্ত নেতিবাচক রয়েছে। গত ২-৬ মে প্রায় ৬,৪১৭ কোটি টাকা বাজার থেকে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে অবশ্য ইদের জন্য ৩ মে বাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল।
কী বলছেন কোটাক সিকিউরিটিজের শ্রীকান্ত চৌহান?
বাজার বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্ত চৌহানের মতে, অপরিশোধিত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, কঠোর আর্থিক নীতির পরিপ্রেক্ষিতে, ভারতে FPI আপাতত অস্থির থাকবে। অর্থাত্ এভাবেই ভারতের ইক্যুইটি বাজারে জোয়ার-ভাটা জারি রাখবে FPI।
বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারীরা (FPI) ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে সাত মাসে ১.৬৫ লক্ষ কোটির টাকারও বেশি তুলেছিল। সেই সময় তারা বিক্রেতার ভূমিকা নিয়েছিল। মূলত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধির প্রত্যাশা থেকে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পরে ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে অবনতি এতে প্রভাব ফেলেছিল।
এর ছয় মাস পর, FPI এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বাজারের সংশোধনের পর থেকে নেট বিনিয়োগকারীতে পরিণত হয়। ইক্যুইটিতে ৭,৭০৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতেই, আবার ১১-১৩ এপ্রিলের ছুটির মাঝে বিক্রির হিড়িক ওঠে। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ জুড়ে চলতে থাকে সেল-অফের প্রবণতা।
ট্রেডস্মার্টের চেয়ারম্যান বিজয় সিংহানিয়ার মতামত
তাঁর মতে, 'বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি কিছুটা চিন্তিত। আর সেই কারণেই সুদের হার বাড়িয়েছে। ফলস্বরূপ ইক্যুইটি বাজারে এর প্রতিফলন ঘটেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিরলসভাবে বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।'
গত ৪ মে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট ৪০ বিপিএস বৃদ্ধি করেছিল। এর পাশাপাশি আগামী ২১ মে থেকে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও ৫০ বিপিএস বৃদ্ধি কার্যকর হতে চলেছে।
এদিকে কিছুটা একইরকম পথে হেঁটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে ইউএস ফেড সুদের হার ৫০ বিপিএস বৃদ্ধি করে, গত দুই দশকে যা সর্বোচ্চ। একইসঙ্গে আগামিদিনে আরও সুদ বৃদ্ধির কথাও জানানো হয়।
একইভাবে সুদের হার বাড়িয়েছে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড। বলাই বাহুল্য, এর ফলেই টালমাটাল বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ।
মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা, চিনে ফের কোভিড বৃদ্ধি। এর ফলে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।