ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে প্রতীক্ষার পর অবশেষে সরকারি ভাবে গালওয়ান উপত্যকায় হওয়া সংঘর্ষ নিয়ে বিবৃতি দিল ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বদলাতে গিয়েছিল গালওয়ান উপত্যকায়। এই নিয়েই গণ্ডগোল ঘটে সোমবার রাতে। অন্যদিকে চিন পুরো ঘটনার জন্য ভারতকে দায়ী করেছে।
গালওয়ানে হওয়া সংঘর্ষে কমপক্ষে কুড়িজন ভারতীয় সেনা মারা গিয়েছেন বলে মঙ্গলবার রাতে জানা গিয়েছে । চিনের দিকেও হতাহত হয়েছে যদিও সংখ্যা জানা যায়নি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নিজেদের বিবৃতিতে বলেছে যে ভারত ও চিন পূর্ব লাদাখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চালাচ্ছে। ধাপে ধাপে কীভাবে সেনা কমানো হবে, ৬ জুনের বরিষ্ঠ কম্যান্ডারদের মধ্যে বৈঠকে তা ঠিক করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সম্মান করার যে সহমত হয়েছিল, সেটা মানেনি চিন, বলছে বিদেশমন্ত্রক। সোমবার সন্ধ্যা ও রাতে, ভয়ানক সংঘর্ষ হয় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে। এর কারণ হল চিন নিজের থেকে ওখানে যে স্ট্যাটাস কো আছে, সেটি বদলাতে গিয়েছিল। অর্থাত্ তারা ওখানে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাটির সীমানা বদলাতে গিয়েছিল, এই অভিযোগ করছে বিদেশমন্ত্রক।
চিনের অভিযোগ যে ভারতীয় সেনা দুই বার সোমবার দিন সীমান্ত পেরিয়ে বেআইনি কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল ও আক্রমণ চালায়। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। নর্থব্লক বলেছে যে ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি সবসময় খুব দায়িত্বশীল ভাবে সামলায়। সেই কারণে ভারত প্রকৃত সীমান্তরেখার নিজের দিকেই ছিল। চিনও সেই একই কাজ করবে, এটা আশা ভারতের।
সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে ভারত বদ্ধপরিকর বলে এদিন ফের জানানো হয়। একই সঙ্গে বিভেদ মেটানোর জন্য আলোচনায় আগ্রহী ভারত। কিন্তু ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের সঙ্গে যে কোনও আপোষ করা হবে না, এটা সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারত। ঘটনার পর পরিস্থিতি শান্ত করতে দফায় দফায় ভারত-চিন সেনার মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যদিও সেই আলোচনার কী ফলাফল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে এক কাঠি ওপরে উঠে এদিন চিনের সেনা দাবি করেছে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা চিরকালই তাদের ছিল। আগামিদিনে যে ভারত-চিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দ্রুত কমবে, সেই সম্ভাবনা যে ক্রমশ কমে যাচ্ছে, তা বলা বাহুল্য।