ভারতের অর্ধেকেরও বেশি চা উৎপাদন হয় অসমে। আর সেই অসমে এবারও কার্যত বড় ক্ষতির মুখে চা শিল্প। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে একেবারে ভয়াবহ তথ্য। এর জেরে অসমের আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রেও মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। আশঙ্কা করছেন অনেকেই। চা প্রস্তুতকারকদের সংস্থা, নর্থ ইস্টার্ন টি অ্য়াসোসিয়েশন সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। সেই রিপোর্ট অনুসারে দেখা যাচ্ছে, গতবছর কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছিল অসমের চা শিল্প। এবার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল চা বাগানগুলি। কিন্তু প্রকৃতি অন্তরায়। অসম জুড়ে এবার বৃষ্টিপাতের যথেষ্ট ঘাটতি। এর জেরে এবছর চা উৎপাদনে প্রায় ৪০ শতাংশ ঘাটতি হতে পারে। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে এবছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটাই কম। এর জেরে ২০১৯ এর তুলনায় প্রায় ৬০ মিলিয়ন কেজি ঘাটতি হতে পারে চা উৎপাদনের নিরিখে।
সমীক্ষাকারী সংগঠনের উপদেষ্টা বিদ্যানন্দ বর্কাকোতি বলেন, আমরা গত বছরের সঙ্গে তুলনা করতে চাইছি না। কারণ গত বছরই জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রায় ৭৮ মিলিয়ন কেজি উৎপাদনে ঘাটতি ছিল লকডাউনের জেরে। আর এবার শতাংশের নিরিখে ২০১৯এর তুলনায় এই সময়কালে প্রায় ৪০ শতাংশ উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে। রাজ্যের চা উৎপাদনকারী জেলাগুলিতে এবার বৃষ্টিপাত গতবছরের এই সময়কালের তুলনায় প্রায় ৪৫ শতাংশ কম।
অভিজ্ঞমহলের মতে, আসলে বৃষ্টিপাতও আঞ্চলিকভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। একেবারে খরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কিছু এলাকায়। যার প্রভাব পড়ছে চা উৎপাদনে। সংগঠনের চেয়ারম্যান সুনীল জালান বলেন, একেবারে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে অসমের চা শিল্প। গতবছর লকডাউন আর এই বছর অনাবৃষ্টি। ভারতীয় চা পরিষদের উপদেষ্টা মৃগেন্দ্র জালান বলেন, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য চা পাতার বৃদ্ধিও কমে যাচ্ছে। এদিকে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে অসমের চা শ্রমিকদের একাংশের মধ্যে করোনার সংক্রমণ। সব মিলিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে অসম জুড়ে।