ভ্যাকসিন ছাড়া আইআইটি ভুবনেশ্বর ক্যাম্পাসের মধ্যে কোনও কর্মী ও শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনই নিয়ম জারি করল আইআইটি কর্তৃপক্ষ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে বলা হয়েছে, আইআইটির সমস্ত অধ্যাপক থেকে শুরু করে পড়ু্য়া ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের ১০ জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়ে নিতে হবে।
শুধু তাই নয়, এই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রত্যেক সোমবারে সবাইকে স্ব-লিখিত ঘোষণা পত্র জমা দিতে হবে যে, কোনও অতিথি বাইরে থেকে ক্যাম্পাসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। আরও জানাতে হবে যে, কেউ ওই ক্যাম্পাস ছেড়ে জেলার বাইরে ঘুরতে বেরোয়নি।
নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে যে, কর্মী ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ নেওয়ার সত্ত্বেও যদি তাঁরা খুরদা, ভুবনেশ্বর ও কটকের বাইরে ভ্রমণ করতে যায়, সেক্ষেত্রেও ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। পুনরায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হলে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নোডাল অফিসারকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হবে। পাশাপাশি আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করে ৫ দিন বাড়িতেই নিভৃতবাসে থাকতে হবে। কোয়ারেন্টিনের পঞ্চম দিনে নমুনা সংগ্রহ করতে হবে।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনও সদস্যের অতিথিদের জন্যও একই নিয়ম লাগু থাকবে। এমনকী, ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ না নেওয়ার ক্ষেত্রে, অতিথিদের পুরো পরিবারকে বাড়িতেই ১০ দিনের নিভৃতবাসে থাকতে হবে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আইআইটির এক অতিথি অধ্যাপকের অভিযোগ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করোনার নিষেধাজ্ঞা নয়, স্বেচ্ছাচারিতা জারি করেছে। আসলে, অধ্যাপক-কর্মীদের প্রবেশ আটকানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করতে এই গাইডলাইন জারি করা হয়েছে। প্রত্যেকদিন কয়েকশো মানুষ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যাতাযাত করেন। তাঁদের রুখতে গিয়ে উল্টে কর্মীদের ভয় দেখাতে চাইছে কর্তৃপক্ষ, যাতে তাঁদের নির্বিচারে শাস্তি দেওয়া যায়। কিন্তু তাঁদের জীবন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত।
অন্য দিকে, এক মেধাবী পডুয়ার বক্তব্য, ‘সরকার যখন ভ্যাকসিনগুলো কার্যকর হিসাবে প্রচার করছে, তখন এটা বুঝে উঠতে পারছি না যে, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত গবেষণা ও উচ্চশিক্ষার এই প্রতিষ্ঠান কীভাবে ভ্যাকসিনগুলোকে অবিশ্বাস করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ এই ‘উদ্ভট’ বিধিনিষেধ শুধুমাত্র কর্মী ও অধ্যাপকদেরই নয়, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপরও প্রভাব ফেলবে। তাঁদের পরিবারের কোনও সদস্যের কথা ভাবুন। ধরুন যদি কোনও কর্মীর ছেলে কিংবা মেয়ে পড়াশুনা অথবা চাকরির জন্য পাশের জেলায় যায়, সেক্ষেত্রে এই নির্দেশিকাগুলি মেনে চললে, তিনি কর্মীর সঙ্গে থাকতে পারবেন না।’
এর পাল্টা আইআইটির জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘সাধারণভাবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে, যাঁদের কাছে টিকা না দেওয়ার বৈধ কারণ নেই, তাঁরাই এই সব অমূলক যুক্তি খাড়া করছেন। কেউ যদি টিকা না দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাঁরা আমাদের জানাতে পারেন। কোনও মানুষকে আংশিক টিকা দেওয়া হলে, সেটি কাজও করে না। সুরক্ষাও দেয় না।তাছাড়া এটা কোনও ধর্মীয় আচার-আচরণ নয়, আমাদের একটি সম্প্রদায়কে টিকিয়ে রাখতে হবে।’