চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আগেই জারি হয়েছিল। এবার উৎসবের মরশুমেও সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়াল ভারত। উল্লেখ্য, এই পদক্ষেপের ফলে গত ৭ বছরে প্রথমবার সম্ভবত বিদেশের বাজারে ভারতের রপ্তানি করা চিনির বিক্রয়ে প্রভাব পড়তে পারে বড়সড় ভাবে। প্রসঙ্গত, বিশ্ব বাজারে চিনির ঘাটতি ও দেশের মাটিতে উৎপাদনে ঘাটতির জেরে দিল্লি এই পদক্ষেপের রাস্তা নিয়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদক ভারত ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চিনির রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ রেখেছিল। তবে নতুন মরশুমে সেই নিষেধাজ্ঞার পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ডিরেক্টর জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড। উল্লেখ্য. বিদেশের মাটিতে চিনি রপ্তানি আপাতত রুখে দেশের মাটিতে চাহিদার সঙ্গে যোগানের ভারসাম্য রাখার চেষ্টায় রয়েছে ভারত। উল্লেখ্য, উৎসবের মরশুমে চিনির উচ্চ চাহিদা থাকার ট্রেন্ড দেখা যায়, সেক্ষেত্রে তার সঠিক যোগান বাণিজ্যিক ভাবে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। উল্লেখ্য, সেই জায়গা থেতে যাতে ঘরোয়া বাজারে উৎসবের মরশুমে চিনির দাম না বেড়ে যায়, সেদিকে তাকিয়ে দিল্লি এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, ভারত চিনির রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর ফলে বিশ্ব বাজারে চিনির যোগানে বড় প্রভাব পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের ২২ টি খাদ্যপণ্যের মধ্যে চিনিকে 'আবশ্যিক' বলে মনে করা হয়, কারণ গ্রাহকরা এর দাম বৃদ্ধির প্রতি সংবেদনশীল। চলতি বছরে ভারতে এল নিনোর প্রভাবে বর্ষা সমানভাবে চলেনি। যার প্রবাব পড়েছে আখের উৎপাদনে। আখ ছাড়াও শস্য, তেলের বীজের উৎপাদনেও এর প্রভাব পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ নিনোনর প্রভাব খাবারের উৎপাদন ও দামে পড়েছে। এর আগে, কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক চিনি মিলগুলির কাছে জানতে চেয়েছিল যে মে ও আগস্ট মাসে তারা বিক্রেতাদের কাছে কতটা পরিমাণ চিনি বিক্রি করেছে। এই তথ্য কেন্দ্রের তরফে চিনি রপ্তানির ক্ষেত্রে ক্লজ ৫ এর বিধির আওতায় জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় এক অফিসারের মতে ‘গত বছরের তুলনায় চিনি উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিলেও উৎপাদন সামগ্রিক গ্রহণের চেয়ে বেশি হবে। সুতরাং, কোন অভাব হবে না।’
উল্লেখ্য, চলতি বছরে দেশের বাজারে টমাটো ও পেঁয়াজের দামে রকেট গতিতে বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। একটা সময় খাদ্যদ্রব্যের দাম লাগাম ছাড়তে শুরু করে। সেই পরিস্থিতিতে, চালের পর চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে নামে কেন্দ্র। ৭ বছর পর চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিল্লি। অক্টোবর মাস থেকে চিনি রপ্তানির যে মরশুম শুরু হয়, সেই মরশুমেই এই রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। যার মেয়াদ বাড়াল কেন্দ্র।