এই মুহূর্তে পাহাড়ি যুদ্ধে বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে দক্ষ বাহিনী রয়েছে ভারতের অধীনে। সম্প্রতি এমনই মন্তব্য করেছেন চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির জন্য সমরাস্ত্র তৈরিতে যুক্ত এক বিশেষজ্ঞ। তাঁর মতে, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে মোতায়েন করা ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যের পর্বতারোহনের প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি।
চিনের সামরিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাতা সরকারি নর্থ ইন্ডাস্ট্রিজ গ্রুপ কর্পোরেশন লিমিটেড (NORINCO) সংস্থার সঙ্গে যুক্ত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও প্রতিরক্ষা পত্রিকা ‘মডার্ন ওয়েপনরি’-তে প্রকাশিত শীর্ষ সম্পাদক হুয়াং গুয়োঝি সম্প্রতি লিখেছেন, ‘এই মুহূরেতে বিশ্বের বৃহত্তম ও অভিজ্ঞতম পার্বত্য বাহিনী রয়েছে না আমেরিকা বা রাশিয়ার, আর না ইউরোপের শক্তিধর কোনও দেশের। এই ক্ষমতা রয়েছে শুধুমাত্র ভারতের।’
উল্লেখ্য, পিএলএ-র জন্য অত্যাধুনিক, ডিজিটাইসড সমরাস্ত্রের জোগানদার বলে পরিচিত NORINCO বর্তমানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্বপ্নের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত।
সাধারণত চিনের কোনও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পত্র-পত্রিকায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা কখনও করা হয় না। উলটে জাতীয়তাবাদী ভাবধারা মেনে বরাবরই নিজস্ব প্রতিরক্ষা শক্তির আস্ফালন এই সমস্ত পত্রিকাজুড়ে থাকে। চিন ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত বিবাদের প্রেক্ষাপটে এমন ব্যতিক্রমী নিবন্ধ এই কারণেই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
পত্রিকা সম্পাদক হুয়াং তাঁর দাবির সপক্ষে জানিয়েছেন, পাহাড়ি রণকৌশল মজবুত করতে বেশ কিছু পেশাদার ও অপেশাদার পর্বতারোহীকে সেনাবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করেছে ভারত। ১২টি বিভাগের অন্তর্গত ২ লাখ জওয়ান সমৃদ্ধ ভারতীয় সেনাবাহিনীকে এই কারণেই পৃথিবীর বৃহত্তম পার্বত্য সেনাবাহিনী বলে মনে করেছেন হুয়াং।
তাঁর দাবি, সত্তরের দশক থেকেই শক্তিশালী ও বিপুলায়তন পার্বত্য বাহিনী গড়ে তুলতে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভবিষ্যতে এমনই ৫০,০০০ বাহিনী গড়ে তোলাই না কি ভারতের পরিকল্পনায় রয়েছে। সিয়াচেন হিমবাহে ৫ হাজার মিটারের উপরের উচ্চতায় ৬০০০-৭০০০ পর্বতযুদ্ধে পারদর্শী জওয়ানকে মোতায়েন রেখেছে ভারত, এমনই দাবি করেছেন হুয়াং।
একই সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর অস্ত্র সম্ভার সম্পর্কেও দরাজ শংসাপত্র দিয়েছেন এই যুদ্ধ বিশারদ। তাঁর প্রবন্ধে বিশেষ উল্লেখ রয়েছে ভারতীয় সেনার সংগ্রহে থাকা আমেরিকায় তৈরি এম৭৭৭, যা বিশ্বের সবচেয়ে হালকা ১৫৫ এমএম হাউইৎজার। এ ছাড়া উল্লেখ রয়েছে সেনাবাহিনীর শক্তিশালী চিনুক হেলিকপ্টার এবং হাই ক্যালিবার স্নাইপার রাইফেল।