ভারতে মুসলিমরা যে স্বাধীনতা উপভোগ করেন, তা যে কোনও ইসলামিক দেশের ধারণারও বাইরে। এমনই মন্তব্য করলেন আইএএস অফিসার শাহ ফয়জল। যিনি জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের ডেপুটি সেক্রেটারি বলেন, ‘এটা শুধু ভারতেই সম্ভব যে কাশ্মীরের এক মুসলিম তরুণ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান দখল করতে পারে এবং (ভারত) সরকারের শীর্ষ স্তরে পৌঁছাতে পারে। তারপর সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে এবং তারপর সেই সরকারই উদ্ধার করে এবং সেই সরকারই ফিরিয়ে নেয়।’
আইএএস অফিসার আরও বলেন, 'ঋষি সুনক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমাদের প্রতিবেশীরা (পড়ুন পাকিস্তান) হয়তো হতবাক হয়ে গিয়েছে। যেখানে সরকারের শীর্ষপদে মুসলিমদের ছাড়া কাউকে বসতে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বাধা আছে। কিন্তু সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় দিক থেকে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কখনও কোনও বৈষম্যমূলক আচরণ করেনি ভারতের গণতন্ত্র।' সঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় মুসলিমরা যে স্বাধীনতা পান, তা তথাকথিত অন্য যে কোনও ইসলামিক দেশের কাছে চিন্তার বাইরে।’
আরও পড়ুন: Muslim Divorce Practices: মুসলিমদের তালাক প্রথা নিয়ে কী ভাবে কেন্দ্র? জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ২০১০ ব্যাচের আইএএস অফিসার শাহ সেই মন্তব্যের বিশেষ তাৎপর্য আছে, কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ২০১০ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষার ‘টপার’। সেই বছরের মার্চেই গঠন করেছিলেন রাজনৈতিক দল জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর (২০১৯ সালের ৫ অগস্ট প্রত্যাহার করা হয়েছিল) তাঁকে এক বছরের বেশি আটক করে রাখা হয়েছিল।
আমেরিকা যাওয়ার পথে ২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট তাঁকে দিল্লি বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাঁরা মামলা দায়ের করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফয়জল। তারইমধ্যে চলতি বছরের এপ্রিলে তাঁকে পুনরায় আইএএস অফিসার হিসেবে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সেইসময় নিজের ‘ভুল’ স্বীকার করে নিয়েছিলেন এবং ‘আরও একটা সুযোগ’ দেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন ফয়জল। আপাতত কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকে কর্মরত আছেন তিনি।