গতবছর হজরত মহম্মদকে নিয়ে বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা নূপুর শর্মার এক মন্তব্যের জেরে উত্তাল হয়েছিল ভারত। বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ হয়েছিল। কোথাও কোথাও এই অশান্ত পরিস্থিতিতে ইন্ধন জুগিয়েছিল পাকিস্তানের আইএসআই। কট্টরপন্থীদের হাতে খুন হতে হয়েছিল বেশ কয়েকজনকে। এই নিয়ে এবার নতুন বছরে ফের বিতর্ক উসকে দিলেন জেডিইউ-র এমএলসি। বিহারের আইন পরিষদের সদস্য গুলাম রসুল বাল্যভি বলেন, 'যদি পয়গম্বরের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করা হয় তাহলে মুসলিমরা ভারতের শহরগুলিকে কারবালায় পরিণত করবে।' জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে এক জনসভায় বক্তৃতা রাখতে গিয়ে এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন গুলাম রসুল। (আরও পড়ুন: 'PoK হোক কি পাকিস্তান, কেউ যাতে খিদেতে মারা না যায়', মঙ্গল কামনা রাজনাথের)
সংবাদসংস্থা এএনআই-এর তরফে গুলাম রসুলের সঙ্গে পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'কারবালা' নিয়ে মন্তব্য করার বিষয়টি স্বীকার করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'আমি একথা বলেছি এবং আমি আমার বক্তব্যে অনড়। কারবালার অর্থ, সবকিছু মনুষত্ব এবং ভাতৃত্বকে রক্ষা করতে বাকি সবকিছু ত্যাগ করা।' এর আগে বৃহস্পতিবার গুলাম যে বক্ততা রাখেন, তার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভাইরাল ভিডিয়োতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমরা কারবালায় দাঁড়িয়ে। যদি আমাদের পয়গম্বরকে কেউ অসম্মান করে তাহলে প্রতিটি শহরকে কারবালায় পরিণত করব।' প্রসঙ্গত, সপ্তম শতাব্দীতে কারবালার যুদ্ধ হয়েছিল। পয়গম্বর হজরত মহম্মদের নাতি হুসেন তাঁর ৭২ জন অনুগামী ও পরিবারের সদস্যকে নিয়ে সেই লড়াই করেছিলেন। জল না পেয়ে খুন কষ্টে প্রাণ হারাতে হয়েছিল সেই ৭২ জনকে। তবে ইসলামের সম্মান রক্ষার্থে সেই লড়াই লড়েছিলেন তাঁরা।
এদিকে জনসভায় নূপুর শর্মার বিষয়ে জেডিইউ নেতা বলেন, 'তথাকথিত কোনও ধর্মনিরপেক্ষ নেতাই এই পাগল মহিলার গ্রেফতারির দাবি করেননি।' তিনি দাবি করেন, দেশে 'মুসলিম সেফটি' আইন প্রণয়ন করা উচিৎ। তাঁর কথায়, যাতে সবসময় মুসলিম যুবকদের 'জঙ্গি' তকমা না দেওয়া হয়, তাই দলিতদের মতোই মুসলিমদের সুরক্ষার জন্যও আইন আনা উচিত। তিনি বলেন, 'এই সময় দেশে আমাদের সন্তানদের তুলে নিয়ে গিয়ে ১৮-২০ বছরের জন্য জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে জঙ্গি বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ প্রতিবাদ করতে যাচ্ছে, তাদের লক্ষ্য করে গুলি করা হচ্ছে। মুসলিমদের অধিকার রক্ষার্থে মুসলিম সেফটি অ্যাক্ট আনা উচিৎ।'
এদিকে জেডিইউ নেতার এহেন মন্তব্য ভালো চোখে দেখছে বিহারের না বিরোধী দল বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং এই নিয়ে বলেন, 'নীতীশ কুমার অসহায় মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ধৃতরাষ্ট্রের মতো বসে আছেন এবং বিহারে সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধির অপেক্ষা করছেন।' বিহারের বিজেপি নেতা নবল কিশোর যাদব বলেন, 'নীতীশ কুমার এবং তেজস্বী যাদব ইচ্ছে করে এমন সব মন্তব্য করছেন যাতে মিডিয়া আকৃষ্ট হয়। বিরোধীরা তাদের এই মন্তব্যের ব্যখ্যা করতে করতে ব্যস্ত থাকবেন।' এদিকে জেডিইউ নেতা মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি জানিয়েছেন, গুলাম রসুলের মন্তব্য নিয়ে তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, 'রাজনীতিবিদদের সচেতন থাকতে হবে যাতে তাঁরা ভাষা সন্ত্রাস না ছড়ান।'
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup