গুজরাটের মৌরবি ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এই আবহে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে। মৌরবি ব্রিজ দুর্ঘটনার যাবতীয় আপডেট জানতে চোখ রাখুন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায়।
আগামিকাল মৌরবি যাবেন প্রধানমন্ত্রী
আগামিকাল মৌরবি যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে। এদিকে আজকে মোদীর বেশ কয়েকটি কর্মসূচি বাতিল করা হয়। এই আবহে মনে করা হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী আজই হয়ত মৌরবি যেতে পারেন। তবে দুপুর নাগাদ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয় আগামিকাল, মঙ্গলবার মৌরবি যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
মৌরবি যাচ্ছেন অশোক গেহলট
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটও সেখানে যাচ্ছেন। আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমরা এতে রাজনীতি করছি না এবং এখনই কাউকে দোষ দিতে চাই না।’
কীভাবে উদ্বোধনের ৫-৬ দিন পরই সেতুটি ভেঙে পড়ে? প্রশ্ন খড়গের
মল্লিকার্জুন খড়গে বলেন, ‘ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সুপ্রিম বা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত হওয়া উচিত। কীভাবে উদ্বোধনের ৫-৬ দিন পরই সেতুটি ভেঙে পড়ে! কে সেখানে এত লোককে ঢুকতে অনুমতি দিয়েছে? ক্ষতিপূরণ সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করা উচিত ক্ষতিগ্রস্থদের।’
‘রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে’
মোদী আরও বলেন, ‘গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল গতকাল রাতে মৌরবি পৌঁছেছেন। তিনি আজ থেকে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন। এই ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। আমি দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে কোনও শিথিলতা থাকবে না।’
মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা মোদীর
মোদী বলেন, ‘দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। এই দুঃসময়ে সরকার সব রকম ভাবে শোকাহত পরিবারের পাশে আছে। গুজরাট সরকার গতকাল থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। কেন্দ্রও রাজ্য সরকারকে সব রকম সাহায্য করছে।’
‘এখন একতা নগরে আছি কিন্তু আমার মন পড়ে আছে মৌরবিতে’
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘আমি এখন একতা নগরে আছি কিন্তু আমার মন পড়ে আছে মৌরবির আক্রান্তদের সঙ্গে। আমার জীবনে খুব কমই এমন ব্যথা অনুভব করেছি আমি। একদিকে বেদনায় ডুবে থাকা হৃদয়, অন্যদিকে কর্তব্যের পথ।’
একটি বাদে মোদীর সব কর্মসূচি বাতিল
আজ সোমবার আমদাবাদে মোদীর রোড শো হওয়ার কথা ছিল। তা বাতিল করা হয়েছে। বিজেপির মিডিয়া সেলের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর। সেই অনুষ্ঠানটিও স্থগিত করা হয়েছে। যদিও ২৯০০ কোটি টাকার রেল প্রকল্প উদ্বোধন করার অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়নি।
আজ মৌরবি যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী
আজ মৌরবি যেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে। লাইভহিন্দুস্তানের রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ মৌরবি গিয়ে আহত ও নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
‘দুর্ঘটনার সমস্ত দিক তদন্ত করা হবে’
গুজরাটের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) রাজ কুমার বলেছেন, নিরাপত্তার ত্রুটির বিষয়টি খতিয়ে দেখবে সরকার। দুর্ঘটনার সমস্ত দিক তদন্ত করা হবে।
‘ব্রিজের ফিটনেস সার্টিফিকেট হয়ত ছিল না’
মৌরবির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সন্দীপ সিং ঝালা সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৫ বছরের জন্য পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওরেভা কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছিল সেতুটি। চলতি বছরের মার্চ মাসে এটি সংস্কারের জন্য জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফের ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষে এটি খুলে দেওয়া হয়। সেতুটি খোলার জন্য কোম্পানিকে ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছিল কি না তা আমাদের জানা নেই।’
গত ২৬ অক্টোবরই খোলা হয়েছিল ব্রিজটি
প্রায় ১৫০ বছর পুরোনো ব্রিজটি সংস্কারের জন্য বন্ধ ছিল গত ৬ মাস। ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষ উপলক্ষে ব্রিজটি ফের জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি
গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংভি জানান, দুর্ঘটনার কারণ জানতে পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ভেঙে পড়া সেতুর বিভিন্ন অংশের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সেই সমস্ত অংশের পরীক্ষা করেই বিশেষজ্ঞরা সেতুর স্বাস্থ্য কেমন ছিল তা বুঝতে পারবেন।
দুর্ঘটনায় দায় স্বীকার করছে সরকার: গুজরাটের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী
গুজরাটের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ব্রিজেশ মের্জা এই দুর্ঘটনা সম্পর্কে এক সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে সংস্কার করা হয়েছিল সেতুটির। আমরা এই দুর্ঘটনায় হতবাক। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি... সরকার এই দুর্ঘটনায় দায় স্বীকার করছে।’
উদ্ধারকাজে সামরিক বাহিনী
এখনও অনেকে নিখোঁজ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাঁদের খোঁজে উদ্ধারকাজ জারি আছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধারকাজে শামিল হয় সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীও। রাতভর ২০০ জনেরও বেশি উদ্ধারকাজে নিযুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
মৃত ১৩২
গুজরাটের মৌরবি ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৩২ হয়েছে বলে জানালেন গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সংভি। সারারাতে উদ্ধারকর্মীরা মোট ১৭৭ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।