এবার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রের নামে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ল। এই অভিযোগটি দায়ের করেছেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাই। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ বিনা আমন্ত্রণেই তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করেছিল। যাকে এককথায় অনুপ্রবেশ বলে। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ অভিযোগ করেছিলেন। তারপর একমাস কাটতে না কাটতেই তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে চলেছে এথিক্স কমিটি। ইতিমধ্যেই বৈঠক দু’দিন পিছিয়ে দিয়েছে কমিটির বৈঠক। এবার বৈঠক হবে ৯ নভেম্বর।
আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাই আগে অভিযোগ করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র অর্থের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আবার নতুন করে অভিযোগ তুললেন জয় অনন্ত। সরাসরি দিল্লি পুলিশকে চিঠি লিখে আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, মহুয়া মৈত্র না জানিয়ে তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করেছিলেন। নভেম্বর মাসের ৫ এবং ৬ তারিখ তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন মহুয়া মৈত্র। চিঠিতে ঠিক কী লিখেছেন আইনজীবী? আজ, মঙ্গলবার আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদরাই লিখেছেন, ‘মহুয়া মৈত্র ইচ্ছাকৃতভাবেই আমার বাসভবনে এসেছিলেন এবং সেখানে প্রত্যেকটি সম্ভাবনা রয়েছে, আমার বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক অভিযোগ দায়ের করার। বিশেষ উদ্দেশেই আমার বাড়িতে এসেছিলেন।’
এদিকে আইনজীবী তাঁর চিঠির মাধ্যমে পুলিশকে আরও জানান, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের এখানে আসার মধ্যে গুরুতর উদ্বেগের কারণ রয়েছে। এই ঘটনায় আমার বাড়ির কর্মীরা ভয় পেয়েছে। আর এই ঘটনা থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠছে, কেন একজন যে দাবি করেছিল, আমার সঙ্গে তাঁর একটি উত্তেজনাপূর্ণ অতীত রয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বাসভবনে এসেছে। তাও আবার দু’দিন ধরে। সূত্রের খবর, মহুয়া মৈত্রর ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক সুপারিশ করতে চলেছে এথিক্স কমিটি। প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডের যে অভিযোগ উঠেছে তাতে সাংসদের নৈতিকতা নিয়ে কমিটি বিস্তারিত মতামত জানাতে চলেছে। তাই এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকার সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশকে ইমেল করল বিসিসিআই, আবার কী চেয়ে পাঠাল ক্রিকেট বোর্ড?
অন্যদিকে আইনজীবী জয় অনন্ত নিজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রমাণ দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁর লিখিত বয়ান অনুযায়ী, মহুয়া মৈত্র একদিন পিনাকী মিশ্রর গাড়িতে করে আসেন। আর একদিন বিধায়ক বিবেক গুপ্তার সাদা ইনোভা গাড়িতে করে আসেন। তবে জয অনন্ত এবং মহুয়ার একটি পোষ্য আছে হেনরি। তাঁদের মধ্যে যখন সম্পর্ক ছিল তখন তা যৌথভাবে কেনা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এখন সম্পর্ক ভেঙে যেতে একে অন্যর বিরুদ্ধে পোষ্য অপহরণের অভিযোগ আনছেন। যদিও সব শেষে জয় অনন্ত চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি ভয়ের কারণ হল মহুয়া মৈত্র আমার পোষ্য হেনরির অজুহাতে বাড়িতে চলে আসছে সম্পর্ক গড়ে তুলতে। আমার রহস্যজনক লাগছে কোনও কারণ এবং আমন্ত্রণ ছাড়া তাঁর বাড়িতে চলে আসাটা। আমি পরিষ্কারভাবে আনাতে চাই, আমি তাঁকে বাসভবনে আমন্ত্রণ জানাইনি। এটা অনুপ্রবেশের সামিল। মহুয়া মৈত্র এবং তাঁর ওড়িশার সহচর আমার শারীরিকভাবে ক্ষতি করার চক্রান্ত করছে বলে মনে হচ্ছে।’