স্বাস্থ্যের জন্য চিনি এড়িয়ে মধু খেতে অনেক পরামর্শ হয়তো আপনি পেয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে মধুর মধ্যে চিনির সিরাপ মেশাচ্ছে অনেক বড় ব্র্যান্ড। এমন তথ্যই জানিয়েছে সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভাওরনমেন্ট। জানা গিয়েছে ১৩টি বড় মধু ব্র্যান্ডের ২২টি স্যাম্পেলের ওপর পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায় ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে চিনির সিরাপ মিশে আছে।
প্রথমে এই স্যাম্পেলগুলি গুজরাতে ন্য়াশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সেন্টার ফর অ্যানালিসিসি ইন লাইভস্টক অ্যান্ড ফুডে (CALF)পরীক্ষিত হয়। সেখানে প্রায় সব ব্র্যান্ডই পরীক্ষায় পাশ হয়। এর কারণ হল ভারতের যে মধুর শুদ্ধতা মাপার পরীক্ষা সেটা চিনা সংস্থারা যেভাবে মধুতে ভেজাল মেশায়, সেটা ধরতে পারে না।
গত বছর ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসআই ) জানিয়েছে যে গোল্ডেন সিরাপ, সুগার সিরাপ ও রাইস সিরাপ ব্যবহার করা হচ্ছে মধুতে ভেজাল মেশানোর জন্য। এরপর সিএসই চিনা পোর্টাল থেকে জানতে পারে তারা ফ্রুকটোজ সিরাপ বিক্রি করে। এটা মধুতে মেশালে ভারতের পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। চিনা সংস্থাগুলি জানিয়েছে যে ৫০-৮০ শতাংশ ভেজাল মেশালোও সেটা পরীক্ষায় ধরা পড়বে না।
তদন্তে উঠে এসেছে যে ডাবর, পতঞ্জলি, বৈদ্যনাথ, জান্ডু সহ প্রায় সব বড় ব্র্যান্ডের মধু নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স টেস্টে ব্যর্থ হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই অভিযোগ একসুরে উড়িয়ে দিয়েছে সংস্থাগুলি। ইমামি বলেছে যে তারা এফএসএসএআইয়ের দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী মধু প্রস্তুত করে। ডাবর জানিয়েছে তাদের মধু সম্পূর্ণ দেশজ ও কোনও কিছু চিন থেকে আনা হয়না। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বেঁধে দেওয়া সমস্ত নিয়মাবলি মানা ছাড়াও ডাবর নিজেদের ল্যাবে এনএমআর টেস্টও করে বলে জানিয়েছে। জার্মানির ল্যাবে করা এনএমআর পরীক্ষার ফলাফলও তারা প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে এই রিপোর্টের নেপথ্যে জার্মান প্রযুক্তি বিক্রি করার ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছে পতঞ্জলি। তাদের মতে ভারতের মধুকে বিশ্বমঞ্চে বদনাম করতে চাইছে এই রিপোর্ট।
সিএসই-র ডিরেক্টর জেনারেল সুনীতা নারায়ণ জানান যে কোভিডের সঙ্গে যুঝছে মানুষ তখন অত্যাধিক চিনি স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই হানিকারক হতে পারে। সফট ড্রিংকস নিয়ে তদন্তে যা পেয়েছিলেন, তার থেকেও এটা বিপজ্জনক বলে তিনি জানান।