অবাক দুঁদে গোয়েন্দারাও। আগে এরকম হাড়হিম করা ঘটনা শোনেননি। অনেকের মতে, কেরালায় এই কায়দায় খুনের এটাই প্রথম। সেজন্য কোল্লামে এক তরুণীর মৃত্যুর তদন্তে কোবরা ও অপর একটি বিষধর সাপের দেহের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নিল পুলিশ। ফলে তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের হাতে আসবে আরও বৈজ্ঞানিক তথ্য।
বছরদুয়েক আগে উথরা এসের (২৫) সঙ্গে সুরজ নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয়। তাঁদের এক ছেলেও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মাসদুয়েক আগে একটি বিষধর সাপ উথরাকে ছোবল মারে। চিকিৎসার জন্য তখন থেকে বাবার বাড়িতেই ছিলেন তিনি। এরইমধ্যে গত ৬ মে রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর উথরার বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পণের দাবিতে সুরজ যে নির্যাতন চালাত, তাও অভিযোগপত্রে জানানো হয়।
তদন্তে জানা যায়, ১০,০০০ টাকার বিনিময়ে সাপুড়ের কাছ থেকে একটি কোবরা কিনেছিল সুরজ। সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও নিয়েছিল। তারপর গত ৬ মে সে উথরার বাড়িতে যায় সুরজ। পুলিশ জানিয়েছে, উথরা ঘুমিয়ে পড়ার পর বোতল থেকে সাপ বের করে উথরার গায়ে ছুড়ে দেয় সে। সাপের ভয়ে নিজে সারা রাত জেগে পরদিন সকালে চুপচাপ ঘর থেকে বেরিয়ে যায় সে এবং বারান্দায় বসে কাগজ পড়তে থাকে।
এরইমধ্যে উথরার মা দেখতে পান, মেয়ে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা উথরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে ঘরে একটি কোবরা খোঁজ মেলে। সেটিকে মেরে ফেলে সুরজ। তবে একই ঘরে থাকা সত্ত্বেও কীভাবে কোরবার উপস্থিতি তার নজর এড়িয়ে গেল, তা নিয়ে উথরার পরিবারের মনে প্রশ্ন জাগতে শুরু করে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে সুরজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাপুড়েকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে সাপ ধরা ও হত্যার জন্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনেও দু'জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বন বিভাগ।
কোলাম গ্রামীণের পুলিশ সুপার এস হরিশংকর বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি এরকম কেস পাইনি। অপরাধের যোগসূত্র পেতে আমাদের যতটা সম্ভব বৈজ্ঞানিক প্রমাণ জোগাড় করতে হবে। আমাদের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, এটা একটা পরিকল্পিত খুন। সাপদুটির ময়নাতদন্তের জন্য আমরা পশু চিকিৎসকদের সাহায্য চেয়েছিল।’ তাঁর মতে, খুনের ঘটনায় যেহেতু কোনও সাক্ষী নেই, তার পারিপার্শ্বিক ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তিনি।