অন্ধবিশ্বাসের জেরে ফের তছনছ হল পরিবার। অণ্ডকোষ সংগ্রহ করে রাখতে পারলে চিরযৌবন মিলবে, এই আশায় রীতিমত খুনই করে ফেলল বাংলাদেশের যশোরের এক ব্য়ক্তি। কোনও এক কবিরাজের কথা শুনেই এই কীর্তি। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে জনৈক নকিম উদ্দীনকে খুন করে তাঁর অণ্ডকোষ ও চোখ সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনার সঙ্গে যোগাযোগ আছে মনে করে দুই সন্দেহভাজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
গত ২৯ মে রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে নকিম উদ্দীন নামে এক দিনমজুর খুন হন। তাঁর ছেলে মাজহারুল ইসলাম বাঘারপাড়া থানায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ আসার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আটক করে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোহাম্মদ জামা গ্রামের লিটন মালিথা (৪০) ও ঐ জেলারই দামুড়হুদা উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের কবিরাজ আব্দুল বারেককে (৬০)।
পুলিশ আধিকারিক সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার মানিকগঞ্জের মাঠ থেকে কৃষকের ছদ্মবেশে থাকা লিটনকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একটি বিচালি গাদার ভেতর থেকে নিহত নকিম উদ্দীনের কেটে নেওয়া যৌনাঙ্গ ও চোখের মণি উদ্ধার করা হয়। লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কথিত কবিরাজ আব্দুল বারেকের কথা জানতে পারে পুলিশ। বুধবার চুয়াডাঙ্গা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ আধিকারিক সাইফুল বলেন, প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, বারেকের নির্দেশে লিটন যৌনশক্তি বৃদ্ধি ও চিরযৌবন পাওয়ার আশায় নরহত্যা করে যৌনাঙ্গ, অণ্ডকোষ ও চোখের মণি সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। পুলিশ একথাও জানতে পেরেছে, লিটন বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে দিনমজুরি অথবা রিকশা চালানোর ফাঁকে সুযোগ খুঁজত। গত ২৬ জুন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা বাজারে যায় লিটন দিনমজুর হিসেবে কাজ করতে। সেখানে নকিম উদ্দীনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। নকিম উদ্দীনের সঙ্গে লিটন কাজে যায় উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের বেনজির আহম্মেদের বাড়িতে। ২৯ মে রাতে লিটন মোবাইল ফোনে কথিত কবিরাজের সঙ্গে কথা বলে। সেই কবিরাজই তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। সেই মোতাবেক কাজ করে সে। যদিও শেষরক্ষা হল না।