কনে হিন্দু। স্রেফ এই গুজব ভিত্তি করে এক মুসলিম যুগলের বিয়ে আটকে দিল উত্তর প্রদেশের কুশিনগর থানার পুলিশ।
গত মঙ্গলবার লখনউ থেকে ৩৫০ কিমি দূরে কুশিনগরে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে কাটাতে হয়েছে শাবিলা খাতুন (২৯) ও তাঁর হবু স্বামী হায়দার আলিকে (৩৮)। অভিযোগ, জোর করে হিন্দু মেয়ের ধর্মান্তকরণ করে মুসলিম পাত্রের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। দুই পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও বিয়েতে বাধা দিয়ে পাত্র-পাত্রীকে থানায় আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ আত্মীয়দের। হায়দার আলির দাবি, তাঁকে থানায় মারধরও করা হয়েছে।
কুশিনগর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই দিন কাশ্য থানার অধীনে গুরমাইয়া খান তলা এলাকা থেকে অভিযোগ আসে, এক হিন্দু মহিলার সঙ্গে জোর করে মুসলিম পাত্রের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের দাবি, ঘটনাটি ‘লাভ জিহাদ’ হিসেবে অভিযোগ জানানোর ফলেই যুগলকে হেফাজতে রাখা হয়েছিল। আধিকারিক জানিয়েছেন, শাবিলার কব্জিতে লাল সুতো বাঁধা দেখতে পেয়েই তাঁকে হিন্দু বলে মনে করেছিলেন স্থানীয়রা।
কাশ্য থানার সার্কেল অফিসার পীযূষ কান্তি রায় জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়ে বিয়ের আসরে পৌঁছে বর, কনে এবং বিয়ের পরিচালক মৌলবিকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, পাত্রী শাবিলা খাতুন আজমগড়ের মুবারকপুরের বাসিন্দা এবং পাত্র হায়দার আলি কুশিনগরের কাশ্য অঞ্চলের বাসিন্দা।
তিনি জানান, ধর্মান্তকরণ করিয়ে বিয়ে রোধ করতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের কড়া নির্দেশের কারণেই অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয় পুলিশ। তবে সেই সঙ্গে, পাত্রকে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন।
আধিকারিকের দাবি, গত ৪ ডিসেম্বর মুবারকপুর থানায় মেয়ে শাবিলা খাতুন নিখোঁজ হয়েছেন বলে এফআইআর দায়ের করেন তাঁর বাবা কামাল আখতার। আটক যুগলকে পরে আজমগড় থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় কুশিনগর থানা। দুই পরিবারের বিয়েতে সম্মতি থাকার কারণে সেখান থেকে তাঁরা মুক্তি পান।
মুবারকপুর থানার ইন্সপেক্টর অখিলেশ মিশ্র জানিয়েছেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে প্রেমিক হায়দার আলির সঙ্গে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান শাবিলা। দেওরিয়া ও গোরক্ষপুরের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে থাকার পরে গত মঙ্গলবার তাঁরা কুশিনগরে বিয়ে করতে যান।
প্রসঙ্গত, গত ২ ডিসেম্বর এক হিন্দু মহিলার সঙ্গে মুসলিম যুবকের বিয়েতে দুই পরিবারের সম্মতি থাকা সত্ত্বেও হস্তক্ষেপ করে আটকে দেয় উত্তর প্রদেশ পুলিশ। সরকারি নির্দেশের জেরে যুগলকে এই বিয়ের জন্য বিশেষ অনুমতি নেওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ।