ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে আমাদের চেনা পৃথিবী। এবং এই বদল বর্তমান দেশ-মহাদেশ, সাগর-মহাসাগরের ধারণা সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। হালে যেমন এই পৃথিবীতেই থাকা ষষ্ঠ মহাসাগরের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা, তেমনই এবার এক নতুন মহাদেশের কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই মহাদেশ এখনও তৈরি হয়নি। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই মহাদেশ তৈরির দিকে এগোচ্ছে। পৃথিবী এগিয়ে চলেছে সেই দিকে।
কোথায় তৈরি হচ্ছে এই মহাদেশ?
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের জল ক্রমশ কমে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, প্রতি বছর গড়ে ১ ইঞ্চি করে উচ্চতা কমছে প্রশান্ত মহাসাগরের। একই ধরনের কথা বলছেন চিনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও। আর এটিই নতুন মহাদেশ বা বলা ভালো মহা-মহাদেশের জন্ম দেবে।
কী কী হতে পারে এর ফলে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের জল যত কমবে, আর্কটিক সাগর এবং ক্যারিবিয়ান সাগর থেকে জল সেদিকে প্রবাহিত হবে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দু’টিই অদৃশ্য হয়ে যাবে। ফলে তৈরি হবে নতুন মহা-মহাদেশ।
কেন মহা-মহাদেশ?
বিজ্ঞানীরা একে বলছেন সুপার-কনটিনেন্ট। তার কারণ, এই দুই সাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পরিবর্তনের ফলে এশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যবর্তী এলাকায় আস্তে আস্তে নতুন ভূখণ্ড সৃষ্টি হবে। এবং সেটি জুড়ে দেবে আমেরিকা এবং এশিয়াকে। ফলে যা তৈরি হবে, তা এক বিরাট ভূখণ্ড। আর সেটিকেই মহা-মহাদেশ বলছেন তাঁরা।
এটিই কি প্রথম?
মোটেও তা নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক সময়ে গোটা পৃথিবীর সমস্ত ভূভাগ এক জায়গায় জড়ো হয়েছিল। সেটি ছিল এক ধরনের মহা-মহাদেশ। জলভাগও ছিল এক জায়গাতেই। সেটিও ছিল এক ধরনে মহা-মহাসাগর। তার পরে টেকটনিক প্লেটের স্থান পরিবর্তনের কারণে নতুন মহাদেশ এবং মহাসাগর তৈরি হয়েছে। কালের নিয়মে এগুলিও থাকবে না।
আপনি কি দেখে যেতে পারবেন নতুন মহা-মহাদেশ?
সম্ভাবনা কম। কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি তৈরি হতে সময় লাগবে প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন বছর। মানে, ২০,০০০,০০০,০০০ বছর থেকে ৩০,০০০,০০০,০০০ বছর। অতটা সময় পর্যন্ত কারও পক্ষেই টিকে থাকা অসম্ভব। তাই দেখার সম্ভাবনা নেই।