ছেলেমেয়েদের অনলাইন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়া নিয়ে জনস্বার্থ মামলাটি খারিজ করে দেয় মাদ্রাজ হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত এও জানিয়েছে, যেহেতু বিষয়টির সঙ্গে নীতি নির্ধারণের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে, তাই সরকারকে এই বিষয়ে দেখতে হবে। আদালত এখনই এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ চাপিয়ে দিতে পারে না।
এদিন মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি সেন্থিকুমার রামমূর্তি জানান, ‘ যেখানে কোনও ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দের প্রশ্ন আসছে, সেখানে আদালত কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, যখনই কোনও বেআইনি বা মানুষের বৃহত্তর স্বার্থের পরিপন্থী কোনও ঘটনা ঘটেছে, তখনই আদালত হস্তক্ষেপ করেছে। কিন্তু এই বিষয়ের ক্ষেত্রে আদালত আগে থেকে কোনও আদেশ জারি করতে পারে না। বিশেষ করে যেখানে নীতি নির্ধারণের প্রশ্ন উঠছে, সেখানে নির্বাচিত সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’ একইসঙ্গে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সরকার যদি তাঁর নীতি নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয় এবং সমাজের পক্ষে যদি তা পরিপন্থী হয়, তাহলেই আদালত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে। তবে মামলাকারী যেভাবে তাঁর আবেদনপত্রে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের প্রযুক্তির সঙ্গে আসক্ত হয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাঁকে মান্যতা দিয়েছে আদালত।
এদিন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্টতই জানিয়েছে, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, এখন অনেক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করাও মোবাইল ফোনে খুব বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছেন। মোবাইল ফোনের মধ্যেই তারা ডুবে থাকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে শাসন বিভাগ যতক্ষণ না কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে, ততক্ষণ আদালতের কিছু করার নেই। এদিন আদালতের তরফে অনলাইন গেমস সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়েছে। ৮ সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান আদালতের কাছে স্পষ্ট করতে হবে।
উল্লেখ্য, মামলাকারীর তরফে আদালতের কাছে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে বলা হয়, যখন স্কুল বন্ধ, তখন এই গেমস শিশুদের আরও বেশি করে ওই সব খেলার প্রতি আসক্ত করে তুলছে। শুধু ছোট ছেলেমেয়েদেরই নয়, এই ধরনের খেলা বড়দের আসক্ত করছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে তাঁদের কেরিয়ার তৈরির ওপর। এর ফলে তাঁদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনি বাবা–মায়ের প্রতি রাগ দেখানো বা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার প্রবণতাও বাড়ছে।