আসনে বসে আছেন বিচারপতি। আর তাঁর সামনে হাতজোড় করে ছলছল চোখে নিজের সমস্যার কথা বলছেন। এমন ঘটনার কথা নানা সময়ে শোনা যায়। হাতজোড় করে বিচারকের সামনে ভেঙে পড়েছেন মামলাকারী। এমন কথাও শোনা যায়। তবে কেরল হাইকোর্ট সম্প্রতি জানিয়েছে, বিচারপতিরা তাঁদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন। সেক্ষেত্রে মামলাকারী কিংবা আইনজীবীদের বিচারকের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়ানোর দরকার নেই। তিনি ভগবান নন। খবর বার অ্যান্ড বেঞ্চ সূত্রে।
রমলা কবীর বনাম রাজ্য সরকারের একটা মামলায় এই পর্যবেক্ষণ আদালতের। বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণানের সামনে এক মহিলা বিচারপ্রার্থী হাত জোড় করে কেঁদে ফেলেছিলেন।
এরপরই বিচারপতি বলেন, আদালতকে আইনের মন্দির বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু বিচারপতির চেয়ারে যিনি বসে আছেন তিনি ভগবান নন। প্রথমত কোনও বিচারপ্রার্থী বা আইনজীবীর হাতজোড় করে কিছু বলার দরকার নেই। কারণ আদালতে সওয়াল করাটা তাদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্য়ে পড়ে। এই আদালতকে আইনের মন্দির বলা হলেও এখানে বেঞ্চে কোনও ভগবান বসে নেই। বিচারপতিরা তাঁদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের আদালতের নিয়মকানুন মেনে চলা দরকার।
আসলে রমলা কবীর নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে অভিযোগ আনা হয়েছিল। কেরল পুলিশ অ্যাক্টে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। আর সেই মামলা খারিজ করার দাবিতে তিনি আদালতে হাত জোড় করে আবেদন করেন।
আসলে মহিলার দাবি, স্থানীয় জায়গায় একটি প্রার্থনা সভা থেকে অত্যন্ত তারস্বরে মাইক বাজিয়ে শব্দদুষণ করা হত। এনিয়ে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে পুলিশ তাকে কটূ ভাষায় অপমান করে। এরপর পুলিশ পালটা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে। তবে সবদিক বিবেচনা করে কবীরের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সার্কেট ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কবীর নিজেই আদালতে সওয়াল জবাবে অংশ নিয়েছিলেন।