কোনও স্বামী যদি স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে অস্বীকার করেন তবে হিন্দু ম্যারেজ অ্য়াক্ট ১৯৫৫ অনুসারে সেটা নিষ্ঠুরতা। তবে আইপিসির ৪৯৮এ ধারার মধ্যে এটা পড়বে না। একজন স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে এনিয়ে ক্রিমিনাল কেস দায়ের করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি কর্ণাটক হাইকোর্ট স্বামীর বিরুদ্ধে হওয়া ওই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। আগে এই মামলা খারিজের জন্য় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন স্বামী। একটি বিশেষ কারণে তিনি সেক্স করেন না বলে জানা গিয়েছে।
২০২০ সালে ওই মামলা দায়ের করেছিলেন স্ত্রী। অন্যদিকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৪৯৮এ ও পণপ্রথা বিরোধী আইনে অভিযোগ আনা হয়েছিল। এনিয়ে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছিল। তবে এই চার্জশিট খারিজ করার অনুরোধ জানিয়ে হাইকোর্টে যান স্বামী।
২০১৯ সালে তাদের বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রী মাত্র ২৮ দিন শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। এরপর ৪৯৮এ ও পণপ্রথা বিরোধী আইনে তিনি পুলিশের কাছে নালিশ করেন। ফ্যামিলি কোর্টেও তিনি মামলা করেন।
তবে হাইকোর্টের বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্নর পর্যবেক্ষণ, আবেদনকারীর স্বামীর বিরুদ্ধে একটাই অভিযোগ যে তিনি এমন একটা ধর্মীয় ভাবধারায় বিশ্বাস করেন যেখানে বলা হয় ভালোবাসা মানে সেটা হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়ের। তার সঙ্গে শারীরিক কোনও ব্যাপার নেই।
আসলে স্ত্রীর অভিযোগ ছিল তিনি যখনই স্বামীর কাছে যেতেন দেখতেন স্বামী ব্রহ্মকুমারীর সিস্টারদের ভিডিয়ো দেখছেন। সেক্স নিয়ে একেবারেই আগ্রহ নেই তার।
তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ , ওই স্বামী কখনও স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেননি। এটা হিন্দু ম্যারেজ অ্য়াক্ট অনুসারে নিঃসন্দেহে নিষ্ঠুরতার ঘটনা। কিন্তু সেটা বধূ নির্যাতনের ৪৯৮এ ধারায় যে নিষ্ঠুরতার কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে পড়ে না।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ , এই মামলায় অপরাধমূলক ধারা প্রয়োগ করা যায় না। এটা যদি হয় তবে সেটা আইনের সঠিক প্রয়োগ হবে না। এটা বিচারব্যবস্থাকে ভুল দিকে প্রয়োগ করা হবে।
মোটের উপর আদালতের পর্যবেক্ষণ এটা ৪৯৮এ ধারায় বর্ণিত বধূ নির্যাতনের যে বিষয় সেটার আওতায় পড়বে না। তবে স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না করা এটা এক ধরণের নিষ্ঠুরতার মধ্য়েই পড়ে। তবে সেটা কোনওভাবেই ৪৯৮এ ধারায় যে নিষ্ঠুরতার কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে পড়ে না।
তবে ওই স্বামীর যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে তিনি এমন একটা আধ্যাত্মিক ভাবধারায় বিশ্বাস করেন যেখানে বলা হয় ভালোবাসা মানে সেটা হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয়ের। তার সঙ্গে শারীরিক কোনও ব্যাপার নেই। বিচারপতিও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।