বিয়েতে কিম্বা বিয়ের আগে, কিম্বা বিয়ের কন্যা বিদায়ের সময় বা তার পরেও একজন মহিলাকে দেওয়া সম্পত্তি হল ‘স্ত্রীধন’ সম্পত্তি, এটি তাঁর নিজের খুশিমত নিষ্পত্তি করার সমস্ত অধিকার রয়েছে। এই বার্তা সাফ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বউয়ের ‘স্ত্রীধন’ নিয়ন্ত্রণ করার কোনও অধিকার স্বামীর নেই। বিপদের দিনে সেই স্ত্রী ধন ব্যবহার করলে, তা অক্ষুণ্ণ রাখা বা তার মূল্য ফিরিয়ে দেওয়ার নৈতিক দায়ও স্বামীর থাকে। একথা সাফ জানিয়েছে কোর্ট।
স্ত্রী ধন সম্পর্কিত এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সদ্য এক ব্যক্তিকে তাঁর স্ত্রীয়ের হারানো গয়নার জন্য ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলায় স্ত্রীয়ের অভিযোগ ছিল তাঁর বাড়ি থেকে তাঁর বিয়েতে বহুমূল্য সোনার জিনিসপত্র উপহার দেওয়া হয়। এর সঙ্গে বিয়ের পর ওই মহিলার স্বামীকে তাঁর বাবা ২ লাখ টাকার চেক দেন। কিন্তু অভিযোগ ছিল, বিয়ের রাতে মহিলার থেকে তাঁর স্বামী সমস্ত গয়না নিজের অধীনে নিয়ে নেন। তাঁর মায়ের গয়নাও ওই ব্যক্তি নিয়ে নিয়েছিলেন বলে দাবি স্ত্রীর। এরপর বিয়ের আগে, ওই ব্যক্তি ও তাঁর মায়ের কিছু দেনা, ওই গয়না থেকে শোধ করা হয়েছে,বলে অভিযোগ ছিল স্ত্রীর। এই মামলা ২০১১ সালে ফ্যামিলি কোর্টও সায় দেয় যে, মহিলার গয়না তাঁর স্বামী ও তাঁর শ্বাশুড়ি মিলে অপপ্রয়োগ করেছেন বলে। ফলে ওই মহিলা তাঁর হারানো সম্পত্তি পেতে বাধ্য বলেও সায় দিয়েছিল কোর্ট। এরপর মামলা কেরল হাইকোর্টে যায়। সেখানে কোর্ট বলে, স্ত্রীধন সম্পত্তি যে স্বামী ও শ্বাশুড়ি নিয়েছেন, তা প্রমাণ করতে পারছেন না মহিলা। এরপর হাইকোর্টের রায়ের পর এই মামলায় ওই মহিলা দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের।
সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে যায়। সেখানে বেঞ্চ সাফ জবাব দিয়েছে যে, স্ত্রীধন সম্পত্তি মোটেও যৌথ সম্পত্তি নয় একজন স্বামী ও তাঁর স্ত্রীর। এই সম্পত্তিতে একজন স্বামীর একক দাপট বা তাঁর একার নামাঙ্কিত বলে গণ্য করতে পারেন না। কোর্ট বলছে, ‘ স্ত্রীধন সম্পত্তির ওপর স্বামীর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি তার দুর্দশার সময় এটি ব্যবহার করতে পারেন তবে তা সত্ত্বেও তাঁর স্ত্রীর কাছে এর মূল্য ফিরিয়ে দেওয়ার নৈতিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।’