এমনিতেই প্রবল বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়েছিল। এবার ঝাড়খণ্ডের গালুডি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে সুবর্ণরেখা অববাহিকা এলাকায় ভয়ঙ্কর বন্যার সতর্কতা জারি করল ওড়িশা। যা ২০০৮ সালের বন্যার থেকেও মারাত্মক হতে পারে। সেইসঙ্গে পড়শি পশ্চিমবঙ্গের কেশিয়াড়ি ও দাঁতন ব্লকের একাধিক এলাকায় প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ওড়িশার বিশেষ ত্রাণ কমিশনার প্রদীপ জেনা জানিয়েছেন, সুবর্ণরেখা ওড়িশায় প্রবেশের ঠিক আগে গালুডি ব্যারেজ দিয়ে ছয় লাখ কিউসেক জল যাচ্ছে। তার জেরে সুবর্ণরেখার অববাহিকা অঞ্চলে মারাত্মক বন্যার সম্ভাবনা আছে। প্লাবিত হতে পারে বালাসোর জেলার বালিয়াপাল, ভোগরাই, জলেশ্বর ও বাস্তা ব্লক এবং ময়ূরভঞ্জ জেলার একাংশ। বুড়িবালাম নদীর ফুঁসতে থাকায় ইতিমধ্যে বালাসোর টাউনের ফুলাড়ি, চন্দমারিপাড়িয়া, কাঁটাবানিয়া এবং পাসিমিলার মতো নিচু এলাকা জলের তলায় চলে গিয়েছে।
জেনার আশঙ্কা, ‘২০০৮ সালের থেকেও এবারের বন্যার প্রভাব বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে।পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি জানান, যে এলাকাগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখান থেকে ইতিমধ্যে মানুষকে সরানোর কাজ চলছে। মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) মোতায়েন করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও সুবর্ণরেখা আতঙ্ক
গালুডি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার ফলে সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ও দাঁতন ব্লকের একাধিক জায়গায় প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষত দাঁতনের বালিডাংরি, রাউতারাপুরের মতো এলাকা এবং কেশিয়াড়ি ব্লকের অমিলাসাই, আটাঙা-সহ একাধিক এলাকার মানুষের মনে প্লাবনের আশঙ্কা চেপে বসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রবিবার ভোর থেকে ক্রমশ বাড়ছে নদীর জলস্তর।
ব্লক প্রশাসনের তরফেও বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দাঁতন ১ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে বালিডাংরি, বড়া, অন্ত্রি রাউতারাপুর-সহ একাধিক এলাকার মানুষকে সতর্ক করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 'প্রবল আতঙ্কে দিন কাটছে। অত্যন্ত দ্রুত নদীর জলস্তর বাড়ছে। এই এলাকা প্লাবিত হলে চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। বেগুন, পটল, কুমড়ো, শাকসবজি নষ্ট হয়ে যাবে।' অপর এক বাসিন্দা বলেন, 'আবারও বাড়ি ভেঙে যেতে পারে। আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।'
(ওড়িশার তথ্য সহায়তায় দেবব্রত মোহান্তি)