করোনা কাঁটায় বিদ্ধ গোটা দেশ। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে করোনার প্রবল সংক্রমণের ঘটনা। ওমিক্রনের দংশনে ভর করে করোনার এই রকেট গতিতে ত্রস্ত গোটা দেশ। তবে শরীরে ওমিক্রন রয়েছে নাকি করোনার অন্য কোনও ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে , তা নিয়ে বহু রোগীই সন্দিহান হয়ে পড়ছেন। এক্ষেত্রে ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। দিল্লির চিকিৎসকরা বিষয়টিতে আলোকপাত করেছেন।
দিল্লির চিকিৎসকরা বলছেন, ওমিক্রনের জেরে আপার রেসপিরেটরি সংক্রান্ত সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে ডেল্টার তুলনায়। দিল্লির শ্রীগঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক শ্রী ধীরেন গুপ্ত বলছেন, শিশুদের মধ্যে ২ বছরের নিচে যারা রয়েছে , ওমিক্রনে তাদের ঘিরে আতঙ্ক অনেকটাই বেশি। এরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এই মুহূর্তে। এদিকে, ১১ থেকে ১২ বছর বয়সীরা অনেক বেশি উপসর্গ নিয়ে ওমিক্রনে আক্রান্ত হলেও এদের ক্ষেত্রে ঝুকির পরিমাণ খানিকটা কম। এদিকে অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক সুরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীদের এক একজনের মধ্যে এক এক ধরনের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। তিনি বলছেন রোগীদের মধ্যে কারোর পেট খারাপের সমস্যা, কারোর বমি, কারোর বা খেতে ইচ্ছে করছে না। একই সঙ্গে আবার অনেকের মধ্যে স্বাদ , গন্ধও হারিয়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখেছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের মতে, অল্প উপসর্গ দেখে ওমিক্রনকে হালকা ভাবে নেওয়ার মতো কিছুই হয়নি। ডক্টর চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ' ওমিক্রনকে সহজভাবে নেওয়া উচিত নয়। কারণ কিছু সংখ্যক মানুষ অবশ্যই এতে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। আমরা ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যায় বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।' চিকিৎসকের মতে, যাঁদের ব্রঙ্কাইটিস , ডায়াবেটিস, অ্যাস্থমার মতো সমস্যা রয়েছে তাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে তা নিঃসন্দেহে বড় অসুস্থতার নামান্তর হতে পারে। ফলে, সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকাই ভালো। চিকিৎসক সুরঞ্জিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, করোনাকালের আগেও যাঁরা যে কোনও অল্প সংক্রমণের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন, যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের ওমিক্রন নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এদিকে, উপসর্গের দিক থেকে ডেল্টা আক্রান্তের মতো উপসর্গ নিয়েও অনেকে চিকিৎসকের কাছে হাজির হচ্ছেন। যেমন বহু ওমিক্রন আক্রান্তের মধ্যে স্বাদ, গন্ধহীনতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। চিকিৎসক সুরঞ্জিত চট্টোপাধ্যায় বলছেন, 'যাঁদের অনলাইনে আমি চিকিৎসা করছি, তাঁদের অনেকেই প্রথম তিন থেকে পাঁচদিনে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। প্রথম তিন থেকে পাঁচ দিনে তাঁদের জ্বর থাকছে ১০২ থেকে ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। সঙ্গে রয়েছে গলাব্যথা।' এরসঙ্গে অনেকেরই গলাব্যথা রয়েছে। এমন সমস্ত ক্ষেত্রে তিন থেকে পাঁচিনের পর সেরে উঠছেন রোগীরা। চিকিৎসক বলছেন, 'এঁদের অনেকেই নিজের থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।' তবে এমন সুস্থতাও চিকিৎসাবিজ্ঞানকে ভাবাচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।