ফল প্রকাশ নিয়ে বিলম্ব, দীর্ঘ টালবাহানা, দর কষাকষি, দফায় দফায় আলোচনার পর অবশেষে রাজনৈতিক জট কাটল পাকিস্তানে। পড়শি দেশের নির্বাচনে সবাইকে বহুদূর পিছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছিল ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা। তবে শীর্ষে থেকেও সরকার গঠন করতে পারবে না তারা। কারণ ফের একবার ভুট্টোর পিপিপি-র সাথে হাত মেলাল নওয়াজের পিএমএল-এন। তবে ভোটের আগে মনে করা হয়েছিল, পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নওয়াজ শরিফ। তবে পাকিস্তানের মসনদে ফের বসা হচ্ছে না নওয়াজের। রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজনৈতিক সমীকরণ মেলাতে পাকিস্তানের জোট সরকারের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নওয়াজের ভাই শেহবাজ শরিফ। এদিকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হবেন বিলাওয়ালের বাবা আসিফ আলি জরদারি। এর আগে ইমরান খানকে গদিচ্যুত করার সময়ও পিপিপি এবং পিএমএলএন হাত মিলিয়েছিল। সেই সময়ও জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেহবাজ শরিফ। অপরদিকে বিলাওয়াল সেই সরকারের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন।
এদিকে সূত্রের খবর, পিপিপি এবারে আর জোট সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেবে না। এদিকে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার হতে পারেন শরিফের পিএএমএলএন-এর কেউ। আর পাক সংসদের উচ্চকক্ষ সেনেটের চেয়ারম্যান হতে পারেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি। এদিকে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং পঞ্জাবের গভর্নর হবেন পিপিপি থেকে। এদিকে এদিকে পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যে নওয়াজের কন্যা মরিয়াম হবেন, তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল পিএমএলএন-এর তরফ থেকে। নিয়ম অনুযায়ী, আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পাক সংসদের প্রথম অধিবেশন হবে। সেদিন গোপন ব্যালটে স্পিকার নির্বাচন হবে। এরপর স্পিকার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন।
উল্লেখ্য, মনে করা হয়েছিল এবারে চতুর্থবারের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন নওয়াজ শরিফ। তবে নিজে সেই পদে না বসে নিজের ভাইকে গদিতে বসাচ্ছেন নওয়াজ। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের সংসদে মোট ৩৩৬টি আসন আছে। এর মধ্যে ২৬৬টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সেই ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে বাকি ৭০টি আসনে সংরক্ষিত আসনে সেই দলের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। উলল্লেখ্য, সেই ৭০টি সংরক্ষিত আসনের মধ্যে ৬০টি মহিলদের জন্য সংরক্ষিত এবং ১০টি অ-মুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত। বারের নির্বাচনে ২৬৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। ১টি আসনের প্রার্থী মারা যাওয়ায় তাতে ভোট হয়নি। এই আবহে পাক সংসদের ম্যাজিক ফিগার ১৩৪ (বর্তমানে ১৩৩)। নওয়াজের পিএমএল-এন এবারে পেয়েছে ৭৫টি আসনে, ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। এছাড়াও জোটে থাকা করাচি ভিত্তিক এমকিউএম-পি পেয়েছে ১৭টি আসন। ওদিকে পিটিআই সমর্থিত নির্দলরা জিতেছেন ৯২টি আসনে।