তবে কি ভগৎ সিংকে নকল করার চেষ্টা করছিলেন সংসদকাণ্ডে জড়িতরা? তেমনই নানা ইঙ্গিত মিলছে। এনডিটিভির খবর অনুসারে জানা গিয়েছে, গত ১৮মাস ধরে এনিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে খবর। শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হয়। তারা বিভিন্ন রাজ্য থেকে দিল্লিতে এসে জড়ো হয়েছিলেন। তবে তাদের একটা নির্দিষ্ট যোগসূত্র ছিল। সেটা হল ভগৎ সিং ফ্যান ক্লাব। আর সেখান থেকে তাদের সঙ্গে একে অপরের যোগসূত্র তৈরি হয়।
একদিকে যখন সংসদের ভেতরে দুজন যুবক লাফিয়ে নামেন আর স্লোগান দিতে থাকেন তখন সংসদের বাইরে এক তরুণী চিৎকার শুরু করে দেন ,তানাশাহি নেহি চলেগা।
সংসদের মধ্য়ে ছিলেন দুজন। আর সংসদের বাইরে ছিলেন আরও দুজন। সব মিলিয়ে চারজন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। যে দুজনকে সংসদের বাইরে থেকে আটক করা হয়েছে তারা হলেন নীলম ও অমল সিন্ডে। নীলমের বয়স ৪২ বছর। আর অমলের ২৫ বছর বয়স। হরিয়ানার হিসার জেলা থেকে সংসদ চত্বরে এসেছিলেন নীলম। আর মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলা থেকে এসেছিলেন ওই যুবক। ট্রান্সপোর্ট ভবনের সামনে থেকে পুলিশ তাদের আটক করে।
আর সংসদের মধ্য়ে যারা লাফিয়ে পড়েছিলেন তারা হলেন সাগর শর্মা ও মনোরানহান ডি( ৩৫)। তিনি কর্ণাটকের মাইসুরুর বাসিন্দা। বিজেপি এমপি প্রতাপ সিনহার অফিস থেকে ওই পাস দেওয়া হয়েছিল বলে খবর। আর সেই পাস নিয়ে সংসদের ভেতরে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটালেন দুজন।
তবে পরে পুলিশ জানতে পারে আরও দুজন এই ঘটনায় যুক্ত রয়েছে। তারা হল ললিত ঝা। তিনি নীলমের ভিডিয়ো তুলছিলেন। পরে সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান। আর ভিকি শর্মা। তার বাড়িতেই অভিযুক্তরা থাকতেন। ভিকির বাড়ি গুরগাঁওতে। আর ললিতের বাড়ি বিহারে।
দিল্লি পুলিশ তদন্তে দেখে ১৮ মাস আগে মাইসুরুতে তাদের প্রথম মিটিং হয়েছিল। সেই মিটিংয়ে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুরের হিংসা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ৯মাস আগে অপর একটি মিটিং হয়েছিল। চন্ডীগড় বিমানবন্দরের কাছে সেই মিটিং হয়। এরপর মনোরঞ্জন সংসদ ভবনের কাছে এসে গোটা ব্যাপারটা খতিয়ে দেখেন। সেই সময় তারা বুঝতে পারেন সংসদে দেহ তল্লাশির সময় জুতো দেখা হয় না। সেই মতো তারা পরিকল্পনা করেন। যাতে জুতোর মধ্যে স্মোক ক্যান লুকানো যায়। এরপর একাধিকবার তারা রেইকি করেছিলেন।
এরপর সংসদ হামলার দিনটা তারা বেছে নেন। রবিবার চারজন দিল্লি আসেন। ভিকির বাড়িতে তারা ছিলেন। লাতুর থেকে এই স্মোকক্যান আনা হয়েছিল। ইন্ডিয়া গেটের সামনে আধ ঘণ্টা আলোচনা করে তারা সংসদের কাছে আসেন। এদিকে ঠিক যেভাবে ভগৎ সিং ১৯২৯ সালে করেছিলেন সেভাবেই তারা প্রতিবাদ প্রদর্শন করে লিফলেট ছড়াবেন বলে ভেবেছিলেন। দিল্লি থেকে জাতীয় পতাকাও কিনে এনেছিলেন।