কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের মামলায় অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। পুলিশ স্নিফার ডগের সাহায্যে অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছিল। শুধুমাত্র তার ভিত্তিতেই অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল বিহারের আরারিয়া জেলার স্থানীয় আদালত। সেই মামলায় অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করল পাটনা হাইকোর্ট। বিচারপতি আশুতোষ কুমার এবং বিচারপতি অলোক কুমার পাণ্ডের ডিভিশন বেঞ্চ উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অভিযুক্ত অমর কুমারকে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে, ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রমাণের অভাবে ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে
কী ঘটেছিল?
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৯ সালে। আরারিয়ায় একটি মন্দিরের কাছে ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এর পর তাকে খুন করা হয়। পরে কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে পুলিশ একটি স্নিফার ডগ নিয়ে আসে। প্রথমে কুকুরটি মৃতদেহের গন্ধ নেওয়ার পর সন্ধানে গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়িতে যায়। সেটি ছিল অভিযুক্ত অমর কুমারের বাড়ি। সেখানে ঘরের মধ্যেই ছিলেন অমর কুমার। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সেই সংক্রান্ত মামলা চলে বিহারের ওই আদালতে। ২০২১ সালের অক্টোবরে আরারিয়ার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্ট বলেছে, ‘শুধুমাত্র একটি স্নিফার ডগের উপর ভিত্তি করে এভাবে শাস্তি দেওয়া যায় না।’ ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে, পুরো মামলাটি শুধুমাত্র অভিযুক্তের বাড়িতে একটি স্নিফার ডগ প্রবেশ করেছিল তার উপর ভিত্তি করে। হাইকোর্ট বলেছে, স্নিফার ডগের দক্ষতার ওপর এত বেশি নির্ভরতা বিচার ব্যবস্থা মেনে নিতে পারে না।
আদালত আরও বলেছে, যতক্ষণ না আদালত কুকুরের দক্ষতার নির্ভরযোগ্যতা, এর কার্যক্ষমতার আগের ধরন বা তার ক্ষমতা পরীক্ষা না করা হয় ততক্ষণ একটি স্নিফার ডগ সাক্ষ্য প্রমাণ হতে পারে না। এটি মোটেই শক্তিশালী প্রমাণ হতে পারে না।পাটনা হাইকোর্ট অভিযুক্তের দোষের বিষয়ে সরকার পক্ষের আইনজীবীর যুক্তি খারিজ করেছে। এরপরেই হাইকোর্ট অবিলম্বে অভিযুক্তকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। যদিও আদালত পুলিশকে স্নিফার কুকুরের সাহায্য নেওয়া বন্ধ করতে বলেনি। তবে ডিভিশন বেঞ্চের মতে, শুধুমাত্র এই বিষয়টিকে প্রমাণ হিসাবে উপস্থাপন করার আগে অন্যান্য দিকগুলি বিবেচনা করা দরকার।