জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের নামে 'ইন্ডিয়া' আছে। নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (পিএফআই) নামেও আছে 'ইন্ডিয়া'। তাই বিরোধী জোটের নাম 'INDIA' (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স) রাখার যে কৌশল নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল গান্ধীরা; তাতে বিভ্রান্ত হবেন না দেশের মানুষ। এমনই মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে বিজেপি নেতা রবিশংকর প্রসাদ দাবি করেছেন, মোদী বলেছেন যে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন এক ইংরেজ। একইভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নামে ইন্ডিয়া থাকলেও সেই কোম্পানি ইংরেজরাই তৈরি করেছিলেন। আর মোদীর সেই বেনজির আক্রমণের প্রেক্ষিতে মুখে হাসি ফুটেছে বিরোধী নেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, মোদীর কথায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছেন যে ‘INDIA’ জোটের কারণে ভয় পেয়ে গিয়েছেন তিনি। পড়েছেন চাপে।
বিরোধীদের দাবি মতো মোদী সত্যিই চাপে পড়েছেন কিনা, তা সময় বলবে। তবে ‘INDIA’ জোট গঠন করে বিরোধীরা যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, তা রুখতে প্রতি-আক্রমণের পথেই হাঁটেন মোদী। বাদল অধিবেশনের শুরু থেকে যেভাবে সংসদের উভয় কক্ষে মণিপুর ইস্যুতে মোদীর বিবৃতির দাবি তুলেছেন বিরোধীরা, সেই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে গেরুয়া শিবিরের সংসদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই ‘অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স’ নীতিবাক্য মেনে বিজেপি সাংসদদের বার্তা দেন।
আরও পড়ুন: এমন প্রত্যুত্তর দেব TMC সারা জীবন মনে রাখবে, দিল্লি যাওয়ার আগে বলে গেলেন সুকান্ত
সূত্রের খবর, মোদী বলেন যে বিরোধী নেতাদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা যেরকম আচরণ করছেন, তাতে স্পষ্ট গিয়েছে যে তাঁরা বিরোধী আসনে থাকবেন। আর সেটা আগেভাগেই নিজেদের মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছেন। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, বিরোধীরা ‘INDIA’ নাম দিয়ে গিমিক তৈরি করার চেষ্টা করলেও তাতে লাভ হবে না। স্রেফ নামে ’ইন্ডিয়া' থাকলে যে কিছু হবে না, তো বোঝাতে গিয়ে জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, নিষিদ্ধ সংগঠন পিএফআইয়ের প্রসঙ্গেও উত্থাপন করেন মোদী।
পরে বিষয়টি নিয়ে রবিশংকর বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোদীজিকে নিয়ে গর্বিত আমরা। উনি একটা নয়া আশা জাগিয়ে তুলেছেন। ২০২৪ সালেও আমরা ক্ষমতায় আসতে চলেছি। পুরো বিশ্ব সেটা জানে, পুরো দেশও সেটা জানে, বিরোধীরাও সেটা বুঝতে পারছে। কিন্তু বারবার বিরোধিতা করা হচ্ছে। ওরা বুঝে গিয়েছে যে ক্ষমতায় আসবে না। উনি (মোদী) একটি বড় মন্তব্য করেছেন। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন একজন ইংরেজ। ইস্ট ইন্ডিয়ান কোম্পানিও তৈরি করেছিলেন ইংরেজরা। আজকাল লোকজন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন নামও রাখে। ইন্ডিয়ান পিপলস ফ্রন্টও নাম রাখে। অর্থাৎ সামনে কিছু একটা বলা হয়। কিন্তু সত্যিটা আলাদা হয়।’
সেইসঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী মোদী) আমাদের ভোরের মতো জাগ্রত হতে বলেছেন। আমরা যাতে ক্ষমতায় ফিরে আসি, সেজন্য অপেক্ষা করছে দেশ। নিশ্চিতভাবে ২০২৪ সালে আমরা জিতব। ২০২৪ সালের ফলাফল বেরোলেই হেরো বিরোধীদের সংখ্যা কমে যাবে।’
আর মোদীর সেই মন্তব্যের পালটা দিয়েছেন বিরোধী নেতারা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ মুখোপাধ্যায় দাবি, ‘ইন্ডিয়া’ জোট তৈরি হওয়ার পর মোদী যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, সেটা আজ বোঝা যাচ্ছে। আবার সিপিআইএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, মোদী যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সন্ত্রাসবাদী মনোভাব ফুটে উঠেছে।