গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন যে কংগ্রেস রাজদণ্ড 'সেঙ্গল'কে 'যথাযথ সম্মান' দেয়নি। আজকে সংসদ ভনের উদ্বোধনের আগে সেই 'সম্মান' দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে লোকসভার স্পিকারের আসনের পাশে সেই সেঙ্গল প্রতিষ্ঠিত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এতদিন প্রয়াগরাজের জাদুঘরে রাখা ছিল একটি সোনার রাজদণ্ড। সেই রাজদণ্ডই এবার প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হল দেশের নতুন সংসদভবনে। এই সোনার রাজদণ্ডের একটি ইতিহাস রয়েছে। ভারতের স্বাধীনার অধ্যায়ে এই রাজদণ্ডের এক বিশাল বড় ভূমিকা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে যখন ভারত স্বাধীনতা লাভ করে, তখন স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে এই সেঙ্গল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহলরলাল নেহরুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন। এই সোনার রাজদণ্ডটি এতদিন রাখা ছিল এলাহাবাদ জাদুঘরে। তবে আজ এই রাজদণ্ডটি নতুন সংসদভবনে প্রতিষ্ঠিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন সংসদ ভবনে এই সেঙ্গল প্রতিষ্ঠিত করেন, তখন বেশ কয়েকজন তামিল সঙ্গীতজ্ঞ 'নদস্বরম' নামক এক বাদ্যযন্ত্র বাজান। সেই সময় লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন তামিল শৈব মঠের পুরোহিতরা। সেই পুরোহিতরা পবিত্র জল ছিটিয়ে দেন সেঙ্গলের ওপর। সেই সময় তামিল গায়করাও রীতি মেনে গান গেয়ে ওঠেন।
উল্লেখ্য, ‘সেঙ্গল’ শব্দটি তামিল শব্দ ‘সেম্মাই’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘ন্যায়’। এর আগে দক্ষিণের চোলা রাজবংশে এভাবে রাজদণ্ড প্রদান করে রাজ্যাভিষেক হত বা ক্ষমতা হস্তান্তর হত। লর্ড মাউন্টব্যাটেন যখন নেহরুকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রকীক নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন এই সেঙ্গল হস্তান্তরের কথা ওঠে। নেহরু এই নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সি রাজাগোপালচারীকে। তখন এই তামিল ঐতিহ্যের কথা নেহরুকে জানিয়েছিলেন 'রাজাজি'। সেই প্রথা মেনেই পরে ভারতের ক্ষমতার ভার ব্রিটিশদের থেকে নেহরুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন মাউন্টব্যাটেন। এই রাজদণ্ডটি তৈরি তৈরি করা হয়েছিল তামিলনাড়ুতেই। রাজাগোপালচারী এই সেঙ্গল তৈরির জন্য ‘তিরুভাদুথুরাই আথিনাম’ মঠের গুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পরে ভুমিদি বঙ্গারু চেট্টার নামক এক জহুরিকে এই সেঙ্গল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় মঠের তরফে। এই সেঙ্গলটি পাঁচ ফুট উঁচু। এর মাথায় আছে ন্যায়বিচারের প্রতীক তথা শিবের বাহন ‘নন্দী’।