২০১২, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীকে সাহায্য করেছিলেন ভোটে জিততে। ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাহায্য করেছিলেন মোদীর বিজেপিকে হারাতে। তবে কেন্দ্রে মোদীর বিরুদ্ধে 'একনায়কতন্ত্র' চালানোর অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। এদিকে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে উঠছে একগুচ্ছ দুর্নীতির অভিযোগ। রাজ্যে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস একযোগে মমতাকে 'একনায়ক' বলে তোপ দাগেন। তবে প্রশান্ত কিশোরের চোখে মোদী এবং মমতার মধ্যে থেকে কে বড় 'একনায়ক'? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এমনই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল ভোটকুশলীকে। ইউটিউবার সমধীশ ভাটিয়ার সেই প্রশ্নের জবাবে কী বললেন পিকে? (আরও পড়ুন: স্ত্রী 'খোঁচা' মারেন! অকপট রোম্যান্স নিয়ে, সংসারের অজানা কথা PK-র মুখে)
আরও পড়ুন: 'প্রয়োজনে বদল', অগ্নিবীর নিয়োগ নিয়ে বললেন রাজনাথ, 'ক্ষমা চান', দাবি কংগ্রেসের
আরও পড়ুন: রাজ্যের এই সরকারি কর্মীদের মুখে হাসি ফুটিয়ে এবার বড় রায় দিল আদালত
মমতা বনাম মোদী প্রশ্নের মুখে পিকে বলেন, 'ভারতে যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্টানগুলি রয়েছে, সেগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিষয়টা এমন নয় যে আজ নরেন্দ্র মোদী করছেন তো এর আগে ইন্দিরা গান্ধী করেননি। এই দেশে যে নেতা শক্তিশালী হন, তাঁরাই একনায়ক মানসিকতার বহিপ্রকাশ ঘটান। এর জন্যেই বিশ্বের পরিপক্ক গণতন্ত্রগুলি বুঝেছে যে যে নেতাই খুব শক্তিশালী হয়ে যাবেন, তাঁরা প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রভাবিত করতে পারেন। আমার মতে, আমাদের সমাজকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে এই সমস্যা মেটাতে। মোদী বেশি বড় একনায়ক নাকি ইন্দিরা গান্ধী, তা নিয়ে আলোচনা করে লাভ নেই।' এরপরই সঞ্চালক সমধীশ বলেন, 'আমি তো মোদী আর মমতার কথা বললাম, আপনি ইন্দিরা গান্ধীতে চলে গেলেন।' এর জবাবে প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'দেখুন এটার তো তুলনা করা যায় না। একজন কেন্দ্রীয় সরকার চালান, একজন রাজ্য চালান। আমি সবার একনায়কতান্ত্রিক মানসিকতা নিয়েই বলেছি। মোদীর সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর উদাহরণ দিয়েছি কারণ আপনি আপেলের সঙ্গে তো কমলার তুলনা করতে পারেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনা তাই অন্য কোনও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হতে পারে।' (আরও পড়ুন: বাইডেন-ট্রাম্পের মামলায় নজর দিন, কেজরিকাণ্ডে নাক গলানো আমেরিকাকে 'পাঠ' বিজেপির)
আরও পড়ুন: 'বিষ দেওয়া হয়েছে', মুখতার আনসারির মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক ছেলে, জরুরি বৈঠকে যোগী
এদিকে সাক্ষাৎকারে ভোটকুশলীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কাউকে জেতানোর পর মনে হয়েছে যে কাজটা ঠিক করেননি? জবাবে প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'এই প্রশ্ন এর আগেও আমাকে অনেকবার করা হয়েছে। যেমন যদি কোনও বিজেপি সমর্থক থাকেন, তিনি জিজ্ঞেস করবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে আপনার অনুশোচনা হয়েছে? যদি কেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থক হন, তাহলে বলবেন, আপনি মোদীকে কেন জিতিয়েছিলেন... তবে আমার স্পষ্ট কথা, আমার কোনও কিছুতেই কোনও অনুশোচনা নেই। আমে তেমন মানুষ নই যে নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরে আফসোস করবে। আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে শিক্ষা নিয়ে থাকি। যদি ভুল হয়, তাহলে ঠিক করতে হবে। তবে অনুশোচনা নেই।'
প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'যখনই যেখানে আমি যাকে সাহায্য করেছি, অনেক ভেবেচিন্তেই তা করেছি। আমি নিজে আগে ভাবি যে এখানে এই পরিস্থিতিতে থাকলে আমি কাকে ভোট দিতাম। আমি নিজে যাকে ভোট দিতাম, তাকেই আমি ভোটে সাহায্য করি। এমন না যে আমি ভোট একজনকে দিতে চাই কিন্তু লোভের বসে অন্য কাউকে সাহায্য করেছি নির্বাচনে।' এদিকে প্রশান্ত কিশোর দাবি করেন, তিনি কখনও 'প্রফেশনাল ফি' নেননি। তবে প্রচার অভিযানে যে খরচ হয়েছে, তা নিয়েছে তাঁর সংস্থা। পিকে বলেন, 'এমন না যে আমি দোকান খুলে বসে আছি আর কেই এসে আমাকে টাকা দিয়ে কিনে নিল।'
প্রশান্ত কিশোর বলেন, 'আমি টাকা চাই না। আমি চাই যে আমি কোনও মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে কথা বলতে পারি, নিজের মতামত জাহির করতে পারি, সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এটা আমার স্বভিমান। আমাকে কোনওদিন দেখবেন না যে কোনও নেতার পাশে দাঁড়িয়ে আমি সেলফি তুলছি। আমি কোনও রাজনীতিবিদের ফ্যানবয় নই।'