‘স্যার’ লালুপ্রসাদ যাদবের কড়া নজরদারিতে খাসির মাংস রাঁধলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। তবে বাঙালিরা যেভাবে ‘মাটন’ রাঁধেন, সেরকমভাবে খাসির মাংস রাঁধেননি। বরং বিহারের ঐতিহ্যবাহী ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ রাঁধেন। তারপর লালুর বাসভবনেই চেটেপুটে খান কংগ্রেস সাংসদ। শুধু তাই নয়, বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার জন্য নিয়ে যান। প্রিয়াঙ্কাও একেবারে কবজি ডুবিয়ে ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ খান। সেইসঙ্গে দাদার সঙ্গে মজা করে জানতে চান যে সত্যিই রাহুল রেঁধেছেন কিনা। তাতে অবশ্য রাহুল কোনও লুকোছাপা করেননি। বরং সত্যিটাই বলে দেন যে একা রান্না করেননি। লালু এবং লালুর মেয়ে মিসা ভারতীর সঙ্গে রেঁধেছেন। যা শুনে প্রিয়াঙ্কা হেসে ফেলেন। আর সেই পুরো রান্না ও খাওয়া-দাওয়া পর্বের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে কংগ্রেস।
সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ঝিরঝিরে বৃষ্টির মধ্যে লালুর বাসভবনে এসেছেন রাহুল। পুষ্পস্তবক দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান স্বয়ং লালু। তারপর সোজা ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ রান্নার দিকে নজর দেন তাঁরা। রাহুল বলেন, ‘এই বিষয়ের চ্যাম্পিয়ন হলেন লালুজি। আমিও কিছুটা শিখে নিই।’ আর লালু জানান যে বিহার থেকে ছাগল আনা হয়েছে। তা দিয়েই রান্না করা হচ্ছে।
তারপর বিভিন্ন মশলা, আদা-রসুন মাখা দিয়ে মাংস ‘ম্যারিনেট’ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। লালু এবং মিসার নির্দেশ মতো সেই কাজটা করতে থাকেন রাহুল। কোন মশলা কতটা দিতে হবে, তা একেবারে কড়া স্যারের মতো বলে দেন লালু। সেইমতো সব মশলা ও অন্যান্য সামগ্রীর সঙ্গে মাংসটা ভালোভাবে মাখিয়ে নেন রাহুল। তারপর ঢেলে দেন হাঁড়িতে। কয়েকবার নিজেই খুন্তি নিয়ে নড়াচড়া করেন। লালুর কথা মতো প্রয়োজনীয় উপকরণ দেন। লালু নিজেও বিভিন্ন উপকরণ যোগ করতে থাকেন। খুন্তি নাড়েন। রান্না শেষ হয়ে গেল হাঁড়ি চাপা দিয়ে গল্প করতে থাকেন তাঁরা।
খোশমেজাজে লালুর সঙ্গে গল্প করতে থাকেন রাহুল। রাজনৈতিক মহলে খাদ্যরসিক হিসেবে পরিচিত লালু কবে রান্না করতে শিখেছেন, তা জানতে চান কংগ্রেস সাংসদ। লালু জানান, ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় যখন পাটনায় দাদাদের কাছে এসেছিলেন, তখন রান্না করতে শিখেছিলেন। তাঁদের জন্য রান্না করতেন। বাসন মাজতেন। রাহুল জানান যে তিনিও অল্পবিস্তর রান্না করতে পারেন। ইউরোপে যখন কাজ করতেন, তখন একাই থাকতেন। ফলে নিজের কাজটা নিজেকেই করতে হত।
তারইমধ্যে কিছুটা অনুযোগের সুরে লালুর মেয়ে মিসা জানান, বাড়িতে যে রান্না করা হয়, সেটার বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ হয় না। একেবারে শেষমুহূর্তে বাইরের খাবার আবদার করেন। যা শুনে হাসতে থাকেন লালু। সেইসবের মধ্যে রাহুলরা খাওয়া-দাওয়া করতে থাকেন। রুটি দিয়ে স্পেশাল খাসির মাংস খান কংগ্রেস সাংসদ। তারই ফাঁকে রাজনৈতিক কথাবার্তাও হয়। হালকা মেজাজেই বিজেপিকে আক্রমণ শানান রাহুলরা।
সেইসঙ্গে রাহুল জানান, বোন প্রিয়াঙ্কা বলেছেন যে অতি অবশ্যই যেন লালুর বাড়ি থেকে ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ নিয়ে যাওয়া হয়। নাহলে রাহুলের কপালে দুঃখ আছে। সেইমতো প্রিয়াঙ্কার জন্য ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ পাঠিয়ে দেন লালু। রুটি দিয়ে সেই ‘চম্পারণ স্পেশাল মাটন’ খাওয়ার সময় মজা করে প্রিয়াঙ্কা দাদাকে প্রশ্ন করেন, সত্যিই রেঁধেছিস তো? জবাবে রাহুল জানান যে লালু, মিসার সঙ্গে হাত লাগিয়ে রেঁধেছেন। যা শুনে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘গ্রুপ কুকিং।’