‘প্রধানমন্ত্রী মোদী ওবিসি (অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি)র নন, তিনি গুজরাটের তেলি পরিবারে জন্মেছেন’, ওড়িশায় কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ থেকে এই মন্তব্য করে জাতীয় রাজনীতিতে ফের একবার ঝড় তুললেন রাহুল গান্ধী। তিনি তাঁর মিছিলে দিচ্ছিলেন ভাষণ। সেখানেই রাহুল দাবি করেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজের জাতপাত সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন, তা মিথ্যাচার। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাহুলের এই মন্তব্যের আগে বুধবার রাজ্যসভায় সংরক্ষণ ইস্যুতে ঝড় তুলেছিলেন মোদী। সেখানে মোদী বলেছিলেন, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরু সংরক্ষণের বিরোধী ছিলেন। সেই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যত বোমা ফাটালেন রাহুল।
রাহুলের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ‘জেনারেল কাস্ট’ এর আওতাধীন। তিন দাবি করেছেন, গুজরাটের তেলি জাতকে তফশিলি মর্যাদা দিয়েছিল বিজেপি। এই বিষয়ে রাহুল বলেন, ‘তেলি জাতকে ২০০০ সালে ওবিসি (পিছিয়ে পড়া শ্রেণি) র তকমা দিয়েছিল বিজেপি। তিনি জেনারেল কাস্টএ জন্মেছেন।’ রাহুল বলেন, ‘উনি (মোদী) নিজের সারা জীবনেও জাতিগত সুমারিহতে দেবেন না দেশে। কারণ তিনি ওবিসি হিসাবে জন্মাননি, তিনি জেনারেল কাস্টে জন্মেছেন।’ ওড়িশার ঝাড়সুগুড়া থেকে এবার রাহুলের ন্যায়যাত্রা প্রবেশ করবে ছত্তিশগড়ে। যেখানে সদ্য কংগ্রেসকে গদি থেকে সরিয়ে জায়গা দখল করেছে বিজেপি।
এদিকে, গতকালই রাজ্যসভায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর চিঠি উল্লেখ করে, মোদী দাবি করেন যে, সেই চিঠি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীদের লিখেছিলেন নেহরু। আর চিঠিতে নেহরু সংরক্ষণের বিরোধিতা করেছেন। মোদী সেই চিঠির উল্লেখ করে একের পর এক তোপ দাগেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এর আগে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ভূমিকা নিয়ে উচ্চকক্ষে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছিল কংগ্রেস। তারপর রাজ্যসভায় বক্তব্য রাখতে ওঠেন মোদী। তিনি পাল্টা খোঁচা দেন কংগ্রেসকে। মোদী প্রশ্ন তোলেন,'কারা ব্রিটিশের চালু করা দণ্ডবিধি টিকিয়ে রেখেছিল?' তাঁর খোঁচার সুর, ‘কোন মানসিকতা থেকে ভারতের আঞ্চলিক ভাষাগুলিকে প্রাধান্য না দিয়ে ইংরেজিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে?’ এরপরই তিনি সংরক্ষণ ইস্যুতে সরব হন। মোদী বলেন, ‘ নেহরুজি এক বার দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বলেছিলেন, ‘আমি সংরক্ষণের (জাতিগত) বিরুদ্ধে।’ মোদী দাবি করেন, সরকারি চাকরিতে বিশেষত পরিষেবামূলক চাকরিতে সংরক্ষণ ইস্যু থাকলে তাতে কাজের মান ভালো থাকে না। রাজ্যসভায় মোদীর বক্তব্যের পরই এদিন ন্যায় যাত্রা থেকে সরব হন রাহুল।