পুরো জয় হয়নি। তবে বরফ যে অনেকটাই গলেছে, তা সোমবার বিকেলের পর আরও স্পষ্ট হল। কারণ দিল্লিতে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করলেন সচিন পাইলট। একইসঙ্গে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন বিষয়টির সঙ্গে অবহিত নেতারা।
পাইলট ক্যাম্পের এক নেতা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এর কাছে বৈঠকের কথা স্বীকার করে জানান, সোমবার বেলা ১২ টার দিল্লির তুঘলক রোডে রাহুলের বাসভবনে বৈঠক হয়েছে। সেখানে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও। ওই নেতা বলেন, ‘(অশোক) গেহলট সরকারের (শেষ)দিন বাঁচিয়ে দিলেন গান্ধীরা। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, পাইলটের যা যা সমস্যা আছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’
বৈঠকের বিষয়ে অবহিত অপর এক নেতা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে জানিয়েছেন, গেহলট ও পাইলটের মধ্যে যে অমীমাংসিত সমস্যা আছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হতে পারে। যে দুই নেতার মধ্যে ২০১৮ সালে ডিসেম্বর থেকেই বিবাদ চলছে। পরে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। সচিন-সহ রাজস্থানের বিদ্রোহী বিধায়কদের অভাব-অভিযোগ খতিয়ে দেখবে তিন সদস্যের সেই কমিটি।
সোমবার সারাদিনই একের পর এক বৈঠকের মাধ্যমে ‘সন্ধি চুক্তি'-র প্রয়াস জারি রেখেছিল দু'পক্ষই। তারইমধ্যে রাজস্থানের রাজনৈতিক মহলে এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হল - পাইলট কি রাজস্থানে ফিরে যাবে নাকি তাঁকে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে? আগামী ১৪ অগস্ট থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভার অধিবেশনে পাইলট যাবেন কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন করায় রাজস্থানের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী বলেন, ‘সেটা ১৪ তারিখ আছে। তাই হাতে সময় আছে। আমরা শীঘ্রই ঘোষণা করব।’
রাহুল-সচিন বৈঠকের পর সন্ধির বিষয়ে বেশ আশাবাদী কংগ্রেসের একাংশ। সম্ভাব্য সন্ধি চুক্তি নিয়ে আশা প্রকাশ করে এক বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘তাঁরা যখন দেখা করেছেন, তখন একটি ইতিবাচক ফল অনুমেয়।’
সেই নেতার অনুমান যে ভুল নয়, তা সন্ধ্যার দিকে কংগ্রেসের একটি বিবৃতিতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সেই বিবৃতিতে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল বলেন, ‘কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন সচিন পাইলট এবং বিস্তারিতভাবে নিজের অভাব-অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের একটি খোলামেলা এবং গঠনমূলক বৈঠক হয়েছে। কংগ্রেস দল এবং রাজস্থানে কংগ্রেস সরকারের স্বার্থে কাজ করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন পাইলট। সেই বৈঠকের পর কংগ্রেসের (অন্তর্বর্তীকালীন) সভাপতি সোনিয়া গান্ধী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সচিন পাইলট এবং ব্যথিত বিধায়করা যে অভাব-অভিযোগ জানিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখার জন্য কংগ্রেস একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করবে। যা উপযুক্ত সমাধানে পৌঁছাবে।’