বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে পুনরায় চালু হল ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সেই নৌপথ। প্রায় ৫৯ বছর বাংলাদেশের রাজশাহী ও ভারতের মুর্শিদাবাদের মধ্যে এই নৌপথ চালু হল। মূলত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদার করার লক্ষ্যে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই নদী বাণিজ্য রুটটি কয়েকদিন আগেই চালু করা হয়েছে।এর আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির ময়াবন্দর থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে পণ্য পরিবহণ চালু ছিল। কিন্তু ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে অন্যান্য স্থানের মতো এই নৌপথ বন্ধ করা হয়েছিল। তারপর ২০২৪ সালে ফের চালু হল এই জলপথ।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইল শাড়ি নিয়ে টানাটানি, মমতার বাংলা জিআই ট্যাগ পেতেই প্রতিবাদ হাসিনার দেশ
প্রাথমিকভাবে নদী বন্দরটি পদ্মা নদীর মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের ময়া বন্দরের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে পিআইডব্লিউটিটি’র অধীনে নদী বন্দরটি চালু করা হয়েছে। বাণিজ্যের জন্য দুই দেশ ১৯৭২ সালে এই চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ এই চুক্তি সংশোধিত হয়। বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লিগের সদস্য ও রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার মাধ্যমে নদী বাণিজ্য রুট খুলে দেন।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমদানি করা পণ্য পরিবহণ খরচ অনেকাংশে কমাতে বন্দরটির অনেক অবদান রাখবে। রাজশাহীর অর্থনীতিতে গতি আনার পাশাপাশি বাণিজ্য রুট ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।
মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, এ রুটের দূরত্ব মাত্র ১৭ কিলোমিটার। শুকনো মরশুমেও প্রতিটি কার্গোতে ২০০ থেকে ৩০০ টন পণ্য পরিবহণ করা যায়। তবে বর্ষাকালে নদীতে প্রবল স্রোতের কারণে পণ্য পরিবহণ কিছুটা কঠিন হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে ২ টন তুলো নিয়ে একটি ছোট জাহাজ সুলতানপুর বন্দর থেকে ময়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভারত থেকে পণ্য পাঠানো হবে।
মেয়র লিটন বলেন, গত ৫ বছর ধরে তারা নদীবন্দর চালুর কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় অবশেষে এটি সম্ভব হয়েছে। এই নদী পথে মূলত ভারত থেকে পাথর, ফ্লাই অ্যাশ, পাথর, কয়লা, ফলমূল এবং মসলা রফতানি করা হবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ থেকে পাট ও পোশাক আমদানি করতে ব্যবহৃত হবে।নদী বন্দর সম্পূর্ণরূপে চালু হলে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে এবং কম পরিবহণ খরচের কারণে বিভিন্ন পণ্যের দাম কমবে।
তিনি আরও জানান, সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে মংলা বন্দর পর্যন্ত নদীপথ সম্প্রসারণ এবং নদীর নাব্যতার জন্য ভারত ও বাংলাদেশের যৌথভাবে ড্রেজিং করা।নদীতে একটি ৫০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন বার্জ সড়কপথে ২৫টি ট্রাকের সমান বহন করতে পারে। এর ফলে খরচ কমবে।