১৯৯১ সালের ২১ মে। সেই অভিশপ্ত সন্ধ্যেয়ে তামিলনাড়ু শ্রীপেরুম্বুদুর এক জনসভায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর। সেদিন ওই বিস্ফোরণে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে মৃত্যু হয়েছিল ১৬ জনের। তাঁদেরই মধ্যে একজন এস আব্বাসের মা। উল্লেখ্য, সদ্য রাজীব হত্যাকাণ্ডে দোষীদের সাজামুক্তি নিয়ে আব্বাসের পরিবার ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, ‘এটা মানা যায় না’।
৪১ বছর বয়সী আব্বাস ফিরে যাচ্ছেন বারবার সেদিনের অভিশপ্ত স্মৃতিতে। বলছেন, ‘মাকে যখন পেয়েছিলাম তখন তাঁর শরীর জড়ানো ছিল একটা বেডকভারে। শুধু মুখ দেখা যাচ্ছিল।’ সেই সময় আব্বাস ১০ বছর বয়সী। মাতৃহারা আব্বাস সদ্য সুপ্রিম কোর্টে রাজীব হত্যাকারীদের সাজামুক্তি নিয়ে বলছেন, ‘ তাদের মুক্ত হওয়ার ঘটনা মানা যায় না। সবচেয়ে খারাপ লাগছে, তাদের যেভাবে হিরোর সম্মান দেওয়া হচ্ছে, তা দেখে। এটা বিকৃত।’ প্রসঙ্গত, রাজীব হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত, নলিনী হরিহরণ, ভি শ্রীহরন, টি সান্থান, আর পি রবিচন্দ্রন, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমার সকলকেই সাজা থেকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আব্বাস সেকথা তুলে বলছেন, ‘নলিনীর মেয়ে লন্ডনে চিকিৎসক। আর আমাকে দশম শ্রেণির পর স্কুল ছাড়তে হয় রোজগারের জন্য।’ নলিনী ছাড়া পেতে ভেল্লোরবাসী তাঁর মা পদ্মা বলেছিলেন, ‘দোষী সাব্যস্ত হওয়া সত্ত্বেও, একটি ক্ষমা একটি খালাস নয়’। জেল ফেরত রবিচন্দ্রন বলছেন, তাঁকে সমাজ কীভাবে গ্রহণ করবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁর।
উল্লেখ্য, রাজীব হত্যাকাণ্ডে চারজন দোষী শ্রীলঙ্কার বাসিন্দা। তাদের সাজা থেকে মুক্তির পর ত্রিচিতে রাখা হয়েছে। ভারত সরকার অপেক্ষা করে রয়েছে কবে তাদের প্রত্যর্পণ করা হবে শ্রীলঙ্কায় তার জন্য। এদিকে, এসবের মাঝে আব্বাস বলছেন, তাঁর কাছে নেই কোনও বিলাসিতা, নেই সেভাবে ভালো রোজগার। বলছেন, ‘নিজের মেয়েদের কীভাবে ভালো জীবন দেব, তার সহায় সম্বলটুকু নেই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীর সাজা থেকে ছাড়া পাওয়া নিয়ে স্থানীয় তামিল রাজনৈতিক পার্টিগুলি বলছে ‘এটি মানবাধিকারের জয়’। যদিও এই বিষয়ে মন্তব্য করেনি বিজেপি ও কংগ্রেস।