সোভিয়েত জমানা থেকেই দিল্লির 'ভালো বন্ধু' মস্কো। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ভারত সরাসরি কোনও দিকে না ঝুঁকলেও মস্কোর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক চিরকালই বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙলেও ভারত-রুশ সম্পর্কে চিড় ধরেনি। সাম্প্রতিককালে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কেও মস্কোকে দূরে ঠেলে দেয়নি দিল্লি। এই আবহে রুশ বিদেশ নীতি নির্ধারকরা ভারতের সঙ্গে তাদের বোঝাপড়ার সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। এমনটাই জানা গিয়েছে রাশিয়ার পলিসি সংক্রান্ত নথি থেকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অনুমোদিত এই নথি অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে ক্রেমলিন সর্ব স্তরে বোঝাপড়া এবং কৌশলগত সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। (আরও পড়ুন: আম জনতার মাথায় হাত! ORS, প্যারাসিটামল সহ বহু প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম বাড়ল আজ থেকে)
এদিকে ভারতের পাশাপাশি চিনের সঙ্গেও সম্পর্ক মজবুত করার দিকে নজর দিতে চায় রাশিয়া। রুশ সরকারি নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চিনের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করার দিকে মনোনিবেশ করবে রাশিয়া। রুশ নথিতে ভারত সম্পর্কে লেখা, 'ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে একটি বিশেষ কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে রাশিয়া। এই সম্পর্ক থেকে উভয় দেশই উপকার লাভ করবে। সমস্ত ক্ষেত্রেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সম্পর্ককে আরও জোরদার করার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন: আজ থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার, আবেদন জানানো যাবে ৪টি নয়া প্রকল্পে
ব্রিকস, আরআইসি (রাশিয়া, ভারত, চীন), সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও), কমনওয়েলথ অফ ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টেটস (সিআইএস), ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন (ইএইইউ), যৌথ নিরাপত্তা চুক্তি সংস্থা (সিএসটিও)-র মতো সংগঠনগুলির গুরুত্ব বৃদ্ধি করে বিশ্বকে 'মাল্টিপোলার' করার কথা বলা হয়েছে রুশ নথিতে। উল্লেখ্য, গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই গোটা বিশ্বের অর্থসামাজিক এবং ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক বজায় থেকেছে এই সময়কালে। এই নিয়ে আমেরিকা-ব্রিটেনের মতো দেশের 'অস্বস্তি' বেড়েছে। তবে তাতে সার্বিক ভাবে পশ্চিমা দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে চিড় ধরেনি। এদিকে রাশিয়া ও চিন আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে এই এক বছরে। তা নিয়ে ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তবে রাশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত ও চিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা তাদের জন্য খুবই জরুরি। অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত ভাবে এই দুই দেশ রাশিয়াকে সাহায্য করতে পারে। তাই বিদেশ নীতিতে ভারত ও চিনের ওপর বিশেষ নজর দিয়েছে ক্রেমলিন।