ভোটের বদলে নোট মামলায় সাংসদ ও বিধায়কদের কোনও রকমের ছাড় দেওয়ায় সায় নেই সুপ্রিম কোর্টের। শীর্ষ আদালতের ৭ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সোমবার একটি বড় রায় দিয়েছে এই ইস্যুতে। সোমবারের রায়ের হাত ধরে শীর্ষ আদালত তার পুরনো রায় থেকে সরে এসে এই মামলায় নয়া বার্তা দিয়েছে। উল্লেখ্য, এই মামলা চলেছে ১৯৯৩ সালে নরসিংহ রাও সরকারের আমলে ওঠা এক অভিযোগ ঘিরে।
মএর আগে, ১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সাংসদ ও বিধায়কদের অর্থ নিয়ে তার বদলে ভাষণ দেওয়া বা ভোট দেওয়ার বিষয়ে দিয়েছিল রক্ষাকবচ। ২০২৪ সালের ৪ মার্চ সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে সেই রক্ষাকবচ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে। ফলে দেশের শীর্ষ আদালতের সাফ বার্তা কোনও মতেই ঘুষকাণ্ডে ছাড় দেওয়া হবে না। ভোটের বদলে নোট মামলায় কোনও সাংসদ বা বিধায়ক ঘুষ নিয়েছেন এমন অভিযোগ উঠলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে। সেক্ষেত্রে আর তাঁরা রক্ষাকবচের ছাতার তলায় থাকতে পারবেন না। এই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তার আগের রায় থেকে সরে এসে নতুন রায় দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট বলছে ১৯৯৮ সালের রায়, ভারতীয় সংবিধানের ১০৫ ও ১৯৪ অনুচ্ছেদের বিরোধী। এই কারণ দেখিয়ে আগের রায় বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কোর্ট বলছে, দেশের যেকোনও আইনসভায় তা সংসদই হোক বা বিধানসভা, তাতে দেশের কোনও সাংসদ বা বিধায়কদের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ থাকলে, তাতে তাঁরা রক্ষাকবচের জেরে ছাড় আর পাবেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে আইন মেনে পদক্ষেপ করা যাবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সহ ৭ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এই বড় রায় দিয়েছে। এই ঐতিহাসিক রায়ে কোর্ট বলছে, ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রকে ভেঙে দিচ্ছে আইনপ্রণেতাদের ঘুষ ও দুর্নীতি। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, ঘুষ নিয়ে যদি রাজ্যসভা নির্বাচনে কোনও বিধায়ক ভোট দেন , তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যাবে। এই মামলার ক্ষেত্রে উঠে আসছে ১৯৯৩ সালে নরওসিমা রাও সরকারের পক্ষে ঘুষ নিয়ে ভোট দেওয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গ। সেবার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে নরসিংহ রাও সরকারকে ভোট দেওয়ার অভিযোগ ছিল। সেক্ষেত্রে ১৯৯৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এই নোটের বদলে ভোট ইস্যুতে সাংসদ, বিধায়কদের জন্য রক্ষাকবচ দেওয়া হয়। সেই রায়কে বদল করে আজ নয়া রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।