ভারতে লঞ্চের জন্য 'অনেক চ্যালেঞ্জের' সম্মুখীন টেসলা। সরকারের সঙ্গে বসে সেগুলি অতিক্রমের চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার এমনটাই বললেন টেসলার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ইলন মাস্ক। চলতি বছরেই ভারতে গাড়ি বিক্রির পরিকল্পনা মার্কিন ভিত্তিক ইভি-নির্মাতার।
'এখনও সরকারের সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে কাজ করছি,' টুইট করেছেন ইলন মাস্ক।
টুইটার ব্যবহারকারী প্রণয় পাথোলের রিপ্লাইতে তিনি এটা জানান। প্রণয় টুইট করেছিলেন, 'ইয়ো @এলনমাস্ক, ভারতে কবে টেসলা চালু হবে সেই সম্পর্কে কোনও আপডেট আছে? টেসলা দুর্দান্ত এবং বিশ্বের প্রতিটি স্থানে থাকা উচিত্!'
টেসলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিসকে ইলেকট্রিক গাড়ি আমদানি কর কমানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ভারতের উচ্চ আমদানি শুল্কের কথা বারবার তুলেছেন ইলন মাস্ক। এই পরিস্থিতিতে 'বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য অস্থায়ী ত্রাণ শুল্ক' আশা করছেন তিনি। টেসলা ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে গাড়ি লঞ্চ করার আগে কর কমাতে চায়। তার জন্য জোরকদমে লবি চালিয়ে যাচ্ছে।
টেসলার পরিকল্পনা হল প্রথমে মার্কিন মুলুক থেকে ভারতে তাদের গাড়ি নিয়ে আসা। তাছাড়া চিনেও কারখানা হচ্ছে। সেখান থেকেই ভারতে আমদানি করা হবে। ইতিমধ্যেই টেসলার ৭টি মডেলকে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র।
অন্য দেশ থেকে ভারতে গাড়ি আমদানি করলে সেক্ষেত্রে মোটা টাকা শুল্ক দিতে হবে। এমনিতেই টেসলার গাড়ির দাম অনেক। চড়া শুল্কের ফলে দাম আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে এই মুহূর্তে বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, অডি, ভলভোর মতো নামী বিলাসবহুল গাড়ির সেগমেন্টে পড়ে যাবে টেসলা। এমনিতেই এত দামি গাড়ির বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম। তার উপর নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি হিসাবে সেই বাজার ধরা কঠিন হতে পারে টেসলার পক্ষে।
এই কারণেই পরিবহন ও শিল্প মন্ত্রককে শুল্কে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করেছিল সংস্থা। সেখানে ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক বর্তমানের ৬০%-১০০% থেকে কমিয়ে ৪০% করার অনুরোধ জানানো হয়। এদিকে ভারতে কারখানা করার ও পরিকল্পনা নেই টেসলার। ইলন জানিয়েছেন, বাইরে থেকে আমদানিকৃত গাড়িগুলি ভারতে জনপ্রিয় হলে তবেই কারখানার বিষয়ে ভাবা হবে।
তবে কেন্দ্রের এক আধিকারিক সূত্রে খবর, এত সহজে মানতে নারাজ মোদী সরকার। বরং কেন্দ্র পাল্টা শর্ত দিয়েছে টেসলাকে। 'আগে ভারতে কারখানা গড়ুন। উত্পাদন শুরু করুন। তারপর আমদানি কর কমানোর বিবেচনা করা হবে,' জানানো হয়েছে এমনটাই।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও হাইওয়ে মন্ত্রী নীতিন গড়করি কোনওরকম সমঝোতায় যেতে নারাজ। তিনি জানান, 'ভারতেই কারখানা করুন। আমরা সবরকম সাহায্য করতে তৈরি। এখানে বানিয়ে এখানে বিক্রি করুন। খরচও কমবে, দামও কমবে, বিক্রিও বেশি হবে।' এছাড়া টেসলার মতো বড় সংস্থা ভারতে উত্পাদন করলে কর্মসংস্থানও যে বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
বর্তমানে, ভারতে সম্পূর্ণরূপে নির্মিত ইউনিট (CBUs) হিসাবে আমদানি করা গাড়িতে ৬০% থেকে ১০০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। এটি নির্ভর করে ইঞ্জিনের আকার, দাম, বিমা এবং মালবাহী (CIF) মানের উপর।
তবে ভারতে আসার বিষয়ে লক্ষ্য স্থির সংস্থার। সম্প্রতি এক টুইটে ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, ২০২২-এর মধ্যেই ভারতে আসবে টেসলার গাড়ি। ইতিমধ্যেই ভারতে কর্মী-আধিকারিক নিয়োগ করে ফেলেছে টেসলা।