গণতান্ত্রিক সরকারের মুখোশ খুলে ফেলে সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ভুলে যাওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি। সমমনষ্ক ২২টি বিরোধী দলের সঙ্গে বৈঠকে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুললেন সনিয়া গান্ধী।
বৈঠকে দেশের বিধ্বস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০ লাখ টাকার আর্থিক প্যাকেজকে ‘নিষ্ঠুর ঠাট্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। করোনা সংক্রমণ রুখতে মাত্র ৪ ঘণ্টার নোটিশে গত ২৪ মার্চ দেশব্যাপী লকডাউন আরোপ করার সিদ্ধান্তকেও তিনি সরকারি হঠকারিতা বলে বর্ণনা করেন। প্রসঙ্গত, লকডাউন ঘোষণা হওয়ার লপরে এই প্রথম সম্মিলিত বৈঠকে বসলেন বিরোধীরা।
এ দিনের টেলি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেন জনতা দল (সেকুলার) নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়া, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও শিব সেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও তাঁর সতীর্থ সঞ্জয় রাউত, এনসিপি সভাপতি শরদ পাওয়ার এবং দলের নেতা প্রফুল প্যাটেল, ত-ণমূল কংগ্রেস প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলীয় সংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, ডিএমকে প্রধান এম কে স্তালিন, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম প্রধান হেমন্ত সোরেন। এ ছাড়াও ছিলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব ও মনোজ ঝা, লোকতান্ত্রিক জনতা দলের শরদ যাদব, জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা, এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল-সহ মোট ২২টি দলের
কংগ্রেসের তরফে সভাপতি সনিয়া গান্ধী ছাড়াও বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন দলের নেতা রাহুল গান্ধী, এ কে অ্যান্থনি, গুলাম নবি আজাদ, অধীর রঞ্জন চৌধুরী, মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং আহমেদ প্যাটেল।
তবে বিরোধীদের এই আলোচনাসভায় যোগ দেয়নি সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি এবং আম আদমি পার্টি।
বৈঠকের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশায় ঘূর্ণিঝড় আমফানে ৮০ জনের মৃত্যু এবং বিপুল সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির কারণে গভীর শোক প্রকাশ করেন সনিয়া। এর পরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তিনি আক্রমণ শানাতে শুরু করেন।
এ দিন কংগ্রেস প্রধান অভিযোগ করেন, করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে ২১ দিনে যুদ্ধ খতম করার যে প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, তা কার্যত মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের নানান প্রতিশ্রুতি ভুল প্রমাণ করে অতিমারির প্রতীকী ছবি হয়ে উঠেছে দেশজুড়ে লাখ লাখ বিপন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, যাঁরা রোজগার হারিয়ে শিশু কোলে করে দীর্ঘ পথ হেঁটে নিজের গ্রামে ফিরছেন। তাঁদের জন্য খাদ্য ও পানীয় জল এবং ওষুধের মতো ন্যূনতম ব্যবস্থা করতেও ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র।