অবিশ্বাস্য কাজ করে দেখালেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা। জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড ডিম তৈরি করে ফেললেন তাঁরা। যেখানে ডিম তৈরির জন্য দরকার হল না পুরুষের। শুধুমাত্র স্ত্রীলিঙ্গের প্রাণীর একার কৃতিত্বেই তৈরি হয়ে গেল ডিম। মাছির শরীরে এই কাজটি করে দেখালেন বিজ্ঞানীরা।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন বিজ্ঞানী হালে এই অসাধ্যসাধন করেছেন। দলের অন্যতম সদস্য বিজ্ঞানী আলেক্সিস স্পার্লিং বলেছেন, ‘আমরাই প্রথম এমন কিছু করে দেখালাম। জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ারড ভাবে প্রাণীর শরীরের শুক্রাণু ছাড়াই সন্তানের জন্ম দেওয়া সম্ভব— তা দেখাতে সক্ষম হয়েছি আমরা। যেভাবে একটি ভার্জিন মাছিকে সন্তান ধারণ করানো গিয়েছে, তা রীতিমতো যুগান্তকারী। এর পরে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা আরও এগোব।’
আগামী দিনে মাছির বদলে অন্যান্য কীটপতঙ্গ তো বটেই বড় প্রাণীরল ক্ষেত্রেও এই কাজটি করে দেখানোর ইচ্ছা রয়েছে বিজ্ঞানীদের। তবে এর আগে প্রকৃতি নিজেও একই ধরনের কাজ করে দেখিয়েছে। পাখি, মাছ, টিকটিকি, সাপ এভবং সম্প্রতি একটি কুমিরের ক্ষেত্রে এই ধরনের কাণ্ড দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেগুলি সেই অর্থে ব্যতিক্রমী ঘটনা। এর পিছনে প্রকৃতির ভূমিকাই ছিল ষোলো আনা। এবার বিজ্ঞানীরা যা করে দেখালেন, সেটি সম্পূর্ণই তাঁদের নিজেদের ইচ্ছাধীন।
প্রকৃতিতে এমন ঘটনা ঘটার পিছনে নানা কারণ থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হল, যদি কোনও পরিবেশে স্ত্রীলিঙ্গের প্রাণীটি একা হয়ে যা, তাহলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে পরবর্তী প্রজন্মের সম্ভাবনা। আর সেই সব ক্ষেত্রে প্রকৃতি নিজেই নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেয়। স্ত্রীলিঙ্গের প্রাণীটি একাই জন্ম দিয়ে ফেলে সন্তানের। কিন্তু পরীক্ষাগারে কৃত্রিমভাবেও যে এই ঘটনা ঘটানো সম্ভব, তা এর আগে কেউই বিশেষ ভাবতে পারেননি। আর সেটিই করে দেখালেন বিজ্ঞানীরা। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কল্যাণে সে ই কাজে সফল হলেন তাঁরা।
তাঁদের এই আবিষ্কার আগামী দিনে মানুষের অনেক কাজে লাগতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। যে সব যুগল সন্তান ধারণে অক্ষম, বিশেষ করে যে সব ক্ষেত্রে পুরুষের শারীরিক সমস্যাই সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাধা— সেক্ষেত্রে এই দারুণ পদ্ধতি সাহায্য করতে পারে মানুষকেও। এমনই মত তাঁদের। তবে মানুষের ক্ষেত্রে কবে এই জিন টেকনোলজির ব্যবহার হবে, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন। তার আগে অবশ্য বিজ্ঞানকে পেরোতে হবে বহু বহু ধাপ। অপেক্ষাও বহু যুগের।