কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায় পিএসি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই রাজভবন–বিধানসভা সংঘাত প্রকাশ্যে আসে। জল অনেকদূর গড়ায়। রাজ্যপালের চিঠি আর বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভার স্পিকারকে নালিশ—সবাই দেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে সর্বভারতীয় স্পিকার সম্মেলনে রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ভরা সভায় তিনি অভিযোগ করেন, স্পিকারকে অন্ধকারে রেখে কাজ করা হচ্ছে। যার ফলে বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি বিধায়কদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আগে তাঁকে জানাচ্ছে না। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজ্যপালের বিধানসভায় অনধিকার চর্চা।
ঠিক কী ঘটেছে? আজ, বুধবার লোকসভার স্পিকারের নেতৃত্বে দেশের সব স্পিকারদের নিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই পশ্চিমঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমায় না জানিয়ে বিধায়কদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। লোকসভার কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে গেলে স্পিকারের অনুমতি নিচ্ছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ক্ষেত্রে ঠিক বিপরীত কাজ ঘটছে। স্পিকারের অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না।’ ভরা সভায় এভাবে চাঁচাছোলা সমালোচনা করায় অস্বস্তি বেড়ে যায় লোকসভার স্পিকারেরও।
কিন্তু বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় থেমে থাকেননি। তিনি একেরপর এক তথ্য তুলে শোরগেল ফেলে দেন। তাঁর কথায়, ‘কেউ কেউ বিধানসভার একাধিক ইস্যুতে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করছেন। আর তারপরই রাজ্যপাল বিধানসভার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। এমনকী বিধানসভাকে নির্দেশ দিচ্ছেন। যা করা যায় না। আবার যেখানে বিধানসভায় আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে সেখানে বিধায়কদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন।’ অর্থাৎ বিজেপি বিধায়কদের কথায় রাজ্যপাল চলছেন এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন তিনি বলে মনে করা হচ্ছে।
আজ স্পিকারদের এই সম্মেলনে ১২ মিনিট ঝরঝরে বক্তব্য রাখেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বারবার ঘুরে ফিরে আসে রাজপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রসঙ্গ। উঠে আসে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি–সিবিআইয়ের বাড়তি তৎপরতার কথা। একই সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের আচরণও তাঁর বক্তব্যে স্থান পেয়েছে। যা সার্বিকভাবে সবার সামনে সমালোচিত হয়েছে।