জিয়া হক
ভারতের গমের কনসাইমেন্টে অনুমোদন দিল না তুরস্ক। তার ফলে ফিরে আসার জন্য গত ২৯ মে যাত্রা শুরু করেছে একটি জাহাজ। এমনটাই জানিয়েছে এস অ্যান্ড পি কমোডিটি ইনসাইটসে। সূত্র উদ্ধৃত করে ওই সংস্থা জানিয়েছে, গমের গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অনুমতি দেয়নি তুরস্ক।
জাহাজ চলাচলের উপর নজর রাখা একটি সংস্থাকে উদ্ধৃত করে এস অ্যান্ড পি কমোডিটি ইনসাইটসের তরফে জানানো হয়েছে, তুরস্ক থেকে ইতিমধ্যে কান্দলা বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে জাহাজটি। যে জাহাজে ৫৬,৮৭৭ টন গম ছিল। ইস্তানবুলের ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃত করে তথ্যপ্রদানকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওই গমের কনসাইনমেন্টে রুবেল্লা রোগ ধরা পড়েছে। সেজন্য তুরস্কের কৃষি মন্ত্রকের সুবজ সংকেত মেলেনি।
বিষয়টি নিয়ে আপাতত ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, তুরস্কের সেই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ১৫ লাখ টন গমের রফতানি এখনও বাকি আছে।
গমের রফতানিতে বিধিনিষেধ
মার্চের মাঝামাঝি সময় দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিয়েছিল। সেই কারণে ভারতে গমের উৎপাদন হ্রাস পায়। গমের দাম রেকর্ড বৃদ্ধি পায়। এপ্রিলে গমের দাম ৬.৯৫% বেড়েছে। তারপরই ভারত আগামিদিনে গম রফতানি বন্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়।
ভারতের সেই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিশ্বের একাধিক দেশ। বিশেষত ইউরোপের দেশগুলির তরফে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের মধ্যে ভারত গমের রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় হুড়মুড়িয়ে দাম বাড়তে শুরু করেছে ওই দেশগুলিতে। সেই পরিস্থিতিতে জার্মানির তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘জি-৭ ভারতের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করছে।’ যদিও চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ভারতকে দোষারোপ করলে খাদ্য সংকট মিটে যাবে না।’ সঙ্গে বলা হয়, ‘আজ জি-৭ দেশগুলি ভারতের কাছে আবেদন করছে যাতে গম রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি না করা হয়, তাহলে এই দেশগুলি খাদ্য সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে নিজেরা কেন নিজেদের গম রফতানি বাড়াচ্ছে না?’
পরবর্তীতে কেন্দ্রের তরফে রফতানিতে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হয়। গত মাসে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, গত ১৩ মে বা তার আগে গমের যে ‘কনসাইমেন্টগুলি’ শুল্ক দফতরের হাতে পরীক্ষার জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে এবং নথিভুক্ত হয়ে গিয়েছে, সেগুলি বিদেশে পাঠানো যাবে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে বিধিনিষেধ বজায় থাকল।