নাম–মাদভী হিদমা। পরিচিত নয় নামটি। কিন্তু গোয়েন্দাদের কাছে এই মাথাটিরই দামই ৪০ লক্ষ টাকা। কারণ তার হাতেই বদলেছে মাওবাদীদের নয়া নকশা। আর সেই হিংস্র নকশাতেই হল বিজাপুর হামলা। যার জেরে প্রাণ গেল ২২ জন জওয়ানের। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ৪০ বছর বয়সের হিদমার মাওবাদী হিসাবে হাতেখড়ি নয়ের দশকে। তখন সে কিশোর। সেখান থেকে কালের গতিতে গেরিলা বাহিনীর দক্ষ প্রশাসক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে এই মাওবাদী নেতা। তার হাতেই তৈরি হয়েছে একাধিক গেরিলা নেতা। যার মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাই বেশি।
এই হিদমার উপস্থিতির খবর পেয়ে রবিবার ভোরে অভিযানে নামে সিআরপিএফ, কোবরা, ছত্তিশগড় পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড এবং অন্য বাহিনীর ১৫০০ জওয়ান। জওয়ানদের উপর হামলা চালাতে ওত পেতে বসেছিল হিদমার নকশায় তৈরি মাওবাদীদের একটি দল। ৭৯০ জন জওয়ানের একটি দলকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় মাওবাদীরা। প্রায় ৩ ঘণ্টা দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে জওয়ানদের। সেই লড়়াইয়ে ২৫–৩০ জন মাওবাদীও নিহত হয়েছে বলে খবর।
‘ট্যাক্টিক্যাল কাউন্টার অফেন্সিভ ক্যাম্পেন’। মাও অভিধানে ‘টিসিওসি’ নামেই পরিচিত। মাও-হামলায় এই ঘরানাই সুকমার জঙ্গলের ‘মাস্টারমাইন্ড’ মাদভী হিদমা। পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির ১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের প্রধান এই হিদমা। সুকমা জেলার জনজাতি অধ্যুষিত পুবর্তী গ্রামের বাসিন্দা সে। মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য বিশেষ আঞ্চলিক কমিটিরও সদস্য সে। তাঁর টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি আধাসেনা। বিশেষ করে দ্রুত কৌশল বদলে পারদর্শী হিদমাকে ধরতে বারবার বেগ পেতে হয়েছে ছত্তিশগড় প্রশাসনকে।
মাওবাদীরা বিজাপুরের জঙ্গলে যেভাবে লড়াই করল এবং যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে করা হচ্ছে, হিদমার তথ্য দিয়ে ফাঁদে ফেলা হয়েছে জওয়ানদের। এক জওয়ান বন্দুকের ম্যাগাজিন পরিবর্তন করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে এক মাওবাদী ধারাল অস্ত্র দিয়ে জওয়ানের হাত কেটে দেয়। তারপর শরীর লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ভীম মাণ্ডবী খুনের মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এখানে মাওবাদীরা যেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, তা দেখে মনে হচ্ছে, এটা নিশ্চিত একটা ফাঁদই ছিল।