প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকাই হোক বা পাকিস্তান, সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে ওয়ান ডে ক্রিকেটে রীতিমতো দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি ভারতীয় দলকেও নিজেদের ডেরায় কড়া টক্কর দিয়েছেন শাকিব আল হাসানরা। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে শেষ কবে ঘরের মাঠে এমন ল্যাজেগোবরে হয়েছে বাংলাদেশ, মনে করা মুশকিল। আফগানিস্তানের কাছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ওয়ান ডে সিরিজ হেরে যে ক্ষত তৈরি হল বাংলাদেশ ক্রিকেটে, বিশ্বকাপের আগে তা সেরে ওঠা মুশকিল।
আসলে বাংলাদেশের স্পিন সহায়ক পিচে তাবড় তাবড় প্রতিপক্ষ থতমত খেত। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সেই অস্ত্রই যে বুমেরাং হতে পারে, সেটা বুঝে উঠতে পারেননি তামিম-শাকিব-লিটনরা। উপমহাদেশের পিচে আফগানিস্তানের স্পিনাররা কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন, সেটা বোঝা গেল আরও একবার।
মূলত ব্যাটিং ব্যর্থতাতেই সিরিজের প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচে হারতে হয় বাংলাদেশকে। এবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে শুধু ব্যাটসম্যানদের নয়, বাংলাদেশের বোলারদেরও 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি' অবস্থা হয়। আফগানিস্তানের রেকর্ড ইনিংসের জবাবে ব্যাট করতে নেমে দু'শো রানের গণ্ডিও টপকাতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষমেশ বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ হেরে মাঠ ছাড়তে হয় লিটনদের। আফগানিস্তান ১ ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে। ওয়ান ডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ শাকিবদের কাছে।
চট্টগ্রামের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। দুই ওপেনারের জোড়া শতরানে ভর করে তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ৩৩১ রানের বিশাল ইনিংস গড়ে তোলে। দেশের বাইরে কোনও ওয়ান ডে ম্যাচে আফগানিস্তানের এটিই সব থেকে বড় দলগত ইনিংসের রেকর্ড।
রহমানউল্লাহ গুরবাজ ১৩টি চার ও ৮টি ছক্কার সাহায্যে ১২৫ বলে ১৪৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। ইব্রাহিম জাদরান ৯টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১১৯ বলে ১০০ রান করে আউট হন। এছাড়া মহম্মদ নবি ১টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৫ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ। ১টি উইকেট নেন এবাদত হোসেন।
পালটা ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ মাত্র ৭২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। মুশফিকুর রহিমের হাফ-সেঞ্চুরিতে ভর করে তারা শেষমেশ ৪৩.২ ওভারে ১৮৯ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ১৪২ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ জেতে আফগানিস্তান। ওয়ান ডে ক্রিকেটে এটি তাদের তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড।
বাংলাদেশের হয়ে মুশফিকুর ৬৯, মেহেদি হাসান ২৫, শাকিব ২৫, তৌহিদ ১৬ ও লিটন ১৩ রান করেন। আফগানিস্তানের ফজলহক ফারুকি ও মুজিব উর রহমান ৩টি করে উইকেট সংগ্রহ করেন। ২টি উইকেট নেন রশিদ খান। ১টি উইকেট দখল করেন নবি। ম্যাচের সেরা হন রহমানউল্লাহ। গত ৯ বছরের ঘরের মাঠে এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনও দলের কাছে ওয়ান ডে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। এই সময়ের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়া একমাত্র ইংল্যান্ড বাংলাদেশে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ জিততে সক্ষম হয়েছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।