বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ অর্থাৎ WTC-এর শিরোনামের ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার পরাজয়ের পরে ধোনি এবং তাঁর ভক্তদের এক হাত নিয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার হরভজন সিং। আসলে, প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি টানা দ্বিতীয়বার ডব্লিউটিসি ফাইনালে হারার পর টুইটারে ট্রেন্ডিং ছিল। ধোনির কারণে অতীতে আইসিসি ট্রফি জিতেছিল ভারত। তার নেতৃত্বেই ভারত সবচেয়ে বেশি এবং শেষ আইসিসি ট্রফি জিতেছে। একই সময়ে, অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারও ধোনি সম্পর্কে বিবৃতি দিয়েছেন যে তিনি আইসিসি ট্রফি জেতা যতটা সহজ করেছেন ততটা সহজ নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভক্তরা যখন টুইটারে ধোনির প্রশংসা করছিলেন, তখন হরভজন সিং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এক ভক্তকে লক্ষ্য করে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
একজন ভক্ত টুইট করে লিখেছেন, ‘কোনও কোচ, কোনও মেন্টর নেই, তরুণ ছেলেরা, বেশিরভাগ সিনিয়র খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। এর আগে কোনও ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেননি। এই লোকটি সেমিফাইনালে প্রাইম অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অধিনায়ক হওয়ার ৪৮ দিনের মধ্যে একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল।’
আরও পড়ুন… দল নয় তারকাদের নিয়ে মাতামাতি করেই ICC টুর্নামেন্টে ডুবছে ভারত! কোহলিদের খোঁচা দিলেন গম্ভীর
হরভজন সিং এটিকে রিটুইট করেছেন এবং লিখেছেন, ‘হ্যাঁ যখন এই ম্যাচগুলি খেলা হয়েছিল তখন এই যুবকটি একাই ভারত থেকে খেলছিল, বাকি ১০ জন তো খেলেনি, সে একাই বিশ্বকাপ ট্রফি জিতিয়ে ছিল। বিদ্রুপের বিষয় হল যখন অস্ট্রেলিয়া বা অন্য কোনও দেশ বিশ্বকাপ জেতে তখন তাদের শিরোনামে অস্ট্রেলিয়া বা তাদের দেশ জিতেছে বলে বলা হয়, কিন্তু ভারত জিতলে বলা হয় অধিনায়ক জিতেছেন। এটি একটি দলের খেলা। এতে আমরা একসঙ্গে জয়ী হই এবং একসঙ্গে পরাজিত হই।’
যখনই ভারতে আইসিসি শিরোপা জয়ের কথা বলা হয়, প্রায়শই অধিনায়কের নাম আসে। এই কারণে, ২০০৭ এবং ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করা গৌতম গম্ভীরও এর সমালোচনা করেছেন। গৌতম গম্ভীরের মতে বাকি সমস্ত দেশের কাছে যখন তাদের দলটাই আগে কোন ব্যক্তি নয় তখন ভারতে রয়েছে এর ঠিক উল্টো সংস্কৃতি। যার ফলেই আইসিসি আয়োজিত ট্রফিতে সাফল্য অধরা রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন… ভারতের মাটিতে তারা সবাই দাদা, আর বাইরে গেলেই- দ্রাবিড়ের সমালোচনায় গাভাসকর
নিউজ ১৮'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গম্ভীর বলেছেন, ‘দুঃখের বিষয় হল আমাদের দেশ তার দল নিয়ে মাতামাতি করে না। বরং তারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে মাতামাতি করতে ভালোবাসে। আমরা মনে করি দেশের থেকে কোনও এক নির্দিষ্ট ব্যক্তিত্ব অনেকটাই বড় নয়। অন্যদিকে আপনি অন্য দেশগুলোকে দেখুন-ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে কিন্তু ওরা যে কোন ব্যক্তির থেকে দেশকে অগ্রাধিকার দেয়। ভারতীয় ক্রিকেটের স্টেকহোল্ডাররাও এর জন্য দায়ী। ব্রডকাস্টার, মিডিয়া সকলেই যেন কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির 'পিআর' এজেন্সির মতন ব্যবহার করে। মাত্র তিনজন ক্রিকেটারকেই তারা গোটা দিন ধরে তুলে ধরছে। ধরা যাক আপনিও একটা অর্ধশতরান করেছেন আর আমিও করেছি। মিডিয়া গোটা দিন ধরে আমারটা নিয়েই আলোচনা করল। এই জায়গায় পৌঁছাতে আপনি এবং আমি দুজনেই যে কঠিন পরিশ্রমটা করেছি সেটার ক্ষেত্রে আপনার পরিশ্রমকে গুরত্ব দেওয়াই হল না। সারাদিন ধরে শুধু একজনকে দেখালে তো সমর্থকরা ধরেই নেবে ওই স্টার বাকি কেউ কিছু নয়। অন্য ক্রিকেটারটিকে তো সকলেই গড়পড়তা হিসেবে ধরে নেবে।’
আরও পড়ুন… ২ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলাম- ম্যাচের সেরা হয়ে দলের পরিকল্পনার কথা বললেন ট্রেভিস হেড
এমএস ধোনির নেতৃত্বে, ভারত ২০০৭ সালে প্রথম আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল, তার পরে ২০১১ সালে ওডিআই বিশ্বকাপ জিতে ভারত ২৮ বছরের খরার অবসান ঘটিয়েছিল। দুই বছর পর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে ছিল ভারত। ২০১৩ সালের পর, ভারত অনেকবার আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছেছে, কিন্তু শিরোপা জিততে পারেনি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।