২০২৩ সালে রামনবমীর মিছিলে হিংসা হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্তভার এনআইএ’কে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই বছরও (২০২৪ সাল) রামনবমীর দিন বাংলায় নানা অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল। মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনা চরমে উঠেছিল। আর তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি উঠেছিল। তখন এনআইএ’কে এই হিংসার রিপোর্ট জমা দিতে বলে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আজ, শুক্রবার আদালতে শুনানি হলে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেয় এনআইএ। তারপরই আদালত জানিয়ে দিল, মুর্শিদাবাদে রামনবমীর মিছিলে বোমাবাজির ঘটনায় তদন্ত করবে এনআইএ। যা নিয়ে লোকসভা নির্বাচনের মরশুমে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আগেও এনআইএ তদন্ত করেছে এমন ঘটনায়। এবারও এনআইএ তদন্ত করবে। কিন্তু এনআইএ নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ এনআইএ’র এক আধিকারিকের সঙ্গে জিতেন তিওয়ারির গোপন বৈঠক ফাঁস হয়েছে। তারপরই ধরপাকড় শুরু হয়। এই নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য–রাজনীতি। এবার ২০২৪ সালের রামনবমীতে মুর্শিদাবাদের রেজিনগর বিধানসভার শক্তিপুর এলাকা অশান্ত হয়ে ওঠে। একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে রামনবমীর মিছিলে হামলা করার অভিযোগ ওঠে। এমনকী মানিক্যহার এলাকাতেও হিংসা হয়। বাড়ির ছাদ থেকে মিছিলকে লক্ষ করে বোমা ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে দুটি জনস্বার্থ মামলা হয়। সিবিআই এবং এনআইএ তদন্তের দাবি ছিল তাতে।
আরও পড়ুন: হাওড়া–হাটিয়া এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মৃত্যু গজরাজের, রেল–বন দফতরে চলছে দোষারোপের পালা
তবে এই এনআইএ তদন্তের আগে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। কিন্তু তাতে ভরসা রাখতে পারেননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এনআইএ তদন্তের দাবিতে সুর চড়িয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর তারপরই আজ দেখা গেল, রামনবমীতে মুর্শিদাবাদে হামলার ঘটনায় তদন্তভার পেল এনআইএ। এই মামলায় আগের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিল, বহরমপুরের ভোট পিছিয়ে দিতে। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ছিল, যেখানে মানুষ ৮ ঘণ্টা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের উৎসব পালন করতে পারেন না, সেখানে ভোটের কোনও প্রয়োজন নেই।
আর এবার মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এনআইএ তদন্তভার দেওয়ায় খুশি বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ সন্দেশখালি এবং এসএসসি ইস্যুতে জোর ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। সেখানে এই রায় খানিকটা অক্সিজেন জোগাবে বিজেপি নেতাদের বলে মনে করা হচ্ছে। আজ, শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জেলাশাসককে কড়া নির্দেশ দেন। সেখানে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোনও রাজনৈতিক নেতা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় সম্পর্কে কোনও মন্তব্য বা প্রচার করতে পারবেন না। সেটার উপর সম্পূর্ণ নজরদারি রাখতে হবে তাঁকে। আগামী ১৩ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন ঘটনা নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে এনআইএ’কে।