হাত রয়েছে আর ৪৮ ঘণ্টা। কলকাতার মহারণ নিয়ে বাড়ছে উত্তেজনা। তবে এ বার বাংলার ডার্বি হবে গোয়ায়। তবু উন্মাদনায় ঘাটতি নেই। ডার্বির ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই একে অপরের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিতে শুরু করে দিয়েছে। তবে আইএসএলের যে কটি ডার্বি হয়েছে, সবগুলো জিতেছে এটিকে মোহনবাগান। আর সেই ধারাই এ বারও ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর এসসি ইস্টবেঙ্গল।
১৭ দিন পরে রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল এটিকে মোহনবাগান। তবে ডার্বির মহড়া ম্যাচে আটকে যায় সবুজ মেরুন। তাই বাড়তি প্রস্তুতি চলছে জুয়ান ফেরান্দোর টিমের। কোনও ছুটি না দিয়ে রয় কৃষ্ণ, হুগো বৌমাসদের নিয়ে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন স্প্যানিশ কোচ। আইএসএলের প্রথম পর্বে ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিয়েছিল হাবাসের এটিকে মোহনবাগান। এ বারও সেই লক্ষ্য নিয়েই নামবে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এমনটাই জানিয়ে দিলেন ফুটবলাররা।
সবুজ-মেরুন প্লেয়াররা কে কী বললেন দেখে নিন এক নজরে-
হুগো বৌমাস: এটা সত্যি যে অন্য বারের চেয়ে এ বার পরিস্থিতি আলাদা। ফুটবলের পাশাপাশি অন্য অনেকদিকেই ফোকাস রাখতে হচ্ছে। অনেকদিন অনুশীলনের মধ্যে ছিলাম না আমরা। তাই প্রতিদিন কঠোর অনুশীলন করে নিজেদের জায়গায় ফিরতে হবে। ডার্বির গুরুত্ব সব সময়ই আলাদা। বাড়তি মোটিভেশন নিয়ে ম্যাচটা খেলতে হয়। এই ম্যাচটা জিতব আমরা, আমি আত্মবিশ্বাসী। তবে এস সি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে প্রথম পর্বে আমরা সহজ জয় পেয়েছি বা ওরা শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদের কাছে চার গোলে হেরেছে বলে খাটো করে দেখার কোনও প্রশ্ন নেই! ওরাও জেতার জন্যই নামবে। শেষ চারে যেতে হলে বা চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ফিরতে হলে এই ম্যাচে জয় পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রীতম কোটাল: ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এস সি ইস্টবেঙ্গল একবারও আমাদের হারাতে পারেনি। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ। অনেকেই বলছেন, ওরা হায়দরাবাদের কাছে চার গোল খেয়েছে বলে আমরা অ্যাডভান্টেজ পজিশনে আছি, সেটা আমি মানতে পারছি না। এ বারের আমাদের দলের ফুটবলারদের মধ্যে সব থেকে বেশি ডার্বি খেলেছি আমি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই ম্যাচের কোনও ভবিষ্যতবাণী হয় না। কেউ এগিয়েও থাকে না। তবে আমরা শেষ দুটি ম্যাচ ড্র করলেও, এই মাচটা জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। যদি রক্ষণ আটোসাঁটো রেখে খেলতে পারি, যদি গোল অক্ষত রাখতে পারি তা হলে ঠিক গোল করে দেবো। ডার্বি সব সময়ই স্পেশ্যাল। বিশেষ করে আমরা যারা বাংলার ছেলে তাদের কাছে। সদস্য-সমর্থকদের কাছে এর আবেগই আলাদা। লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেও যদি ডার্বি জিততে পারি তা হলে পাড়ায় বা রাস্তায় গেলে শুনতে হয়, ‘যতই চ্যাম্পিয়ন হও ডার্বি তো জিততে পারোনি।’ তাই এই ম্যাচটা জিততেই হবে। নতুন কোচের দর্শন আলাদা, হয়তো সেটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে একটু সময় লাগছে। তবে শেষ ম্যাচে আমাদের দল যথেষ্ট ভাল খেলেছে।
শুভাশিস বসু: আমাদের কাছে ডার্বির গুরুত্ব অন্য রকমের। যখনই এই ম্যাচটা খেলতে নামী অন্য একটা আবেগ কাজ করে। লিগ টেবলের যা পরিস্থিতি তাতে এই ম্যাচটা জিতলে শেষ চারে ঢুকে যাওয়া যাবে। তাই আবেগের পাশাপাশি লিগের অঙ্কটাও মাথায় রাখতে হবে। আমরা অন্যদের তুলনায় কম ম্যাচ খেলেছি এটা আমাদের পক্ষে সুবিধা। সেই সুযোগটা নিতে হবে। হায়দরাবাদের কাছে এস সি ইস্টবেঙ্গল চার গোল খেয়েছে বলে ওদের ছোট করে দেখার কোনও কারণ নেই। কিছু ভুলে গোল খেয়ে গিয়েছে সেদিন। ইস্টবেঙ্গল হায়দরাবাদ ম্যাচ আমাদের পুরো দল হোটেলে বসে দেখেছে। সেজন্যই বলছি লড়াইটি কঠিন। সবথেকে বড় কথা আইএসএলে যে কোনও দল যে কোনও দলকে হারিয়ে দিতে পারে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।