অবশেষে ১২ বছর পর শাপমুক্তি হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। কার্লেস কুয়াদ্রাতের হাত ধরে এক দশকেরও বেশি সময় পরে সর্বভারতীয় ট্রফি ঢুকল ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। রবিবার ওড়িশা এফসিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন হল ইস্টবেঙ্গল এফসি। এক গোলে পিছিয়ে থেকেও দুরন্ত প্রত্যাবর্তন করল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নাটকীয় জয়। লাল-হলুদ উচ্ছ্বাসে ভাসল কলিঙ্গ স্টেডিয়াম।
শেষ বার ২০১২ সালে শিলিগুড়িতে ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের হাত ধরে ফেডারেশন কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। তার পর দীর্ঘ ১২ বছরের প্রতীক্ষা। অবশেষে শাপমোচন হল। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা মাত্র সেলিব্রেশন শুরু গ্যালারিতে। ঢাক, ঢোল, স্লোগান, ফেস্টুন, লাল-হলুদের জয়জয়কার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে।
ইস্টবেঙ্গলের জয়ের মাঝে বিশেষ ভাবে মন ছুঁয়ে গেলেন ক্লেটন সিলভা। নিঃসন্দেহে একস্ট্রা টাইমে খেলা চলাকালীন ১১১ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করে লাল-হলুদকে অক্সিজেন দিয়েছিলেন দলের অধিনায়ক ক্লেটনই। জয়সূচক গোলটি করে জার্সি খুলে সেলিব্রেশন করতে গিয়ে কার্ড দেখেন। তাতেও কুছ পরোয়া নেহি। লাল-হলুদের জয়টাই যে আসল। গোল করে মন জেতার পাশাপাশি টিমম্যান হিসেবে ক্লেটন মন জিতল বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবল মহলের।
আরও পড়ুন: ১২ বছরের শাপমুক্তি, নাটকীয় ম্যাচে ওড়িশাকে ৩-২ হারিয়ে সুপার কাপ চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সময়ে নিজে ট্রফি না নিয়ে সেই সুযোগ করে দিলেন, এদিনের ম্যাচে দুরন্ত ছন্দে থাকা ডিফেন্ডার শৌভিক চক্রবর্তীকে। বাঁ-হাত থেকে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড খুলে পরিয়ে দিলেন শৌভিকের হাতে। বঙ্গসন্তানকে এগিয়ে দিলেন ট্রফি নেওয়ার জন্য। ক্লেটনের এমন আচরণ দেখে গ্যালারিতে তখন হাততালির ঝড়। কিন্তু নাছোড় শৌভিকের জোড়াজুড়িতে ক্লেটন তাঁর সঙ্গে স্টেজে উঠে নিতে হল ট্রফি।
আরও পড়ুন: সম্মানের অভাবে মানসিক অবসাদ, বার্সা ছাড়ার ঘোষণা জাভির
ম্যাচে সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ক্লেটনকে বলতে শোনা গেল, ‘এই জয় শুধু আমার নয়, গোটা দলের। ম্যাচ শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে আমরা গোল খেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাল ছাড়িনি। গোটা দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে। পাঁচটা ম্যাচেই ভালো খেলেছি। খুব ভালো লাগছে। ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মোহনবাগানের কাছে হারের যন্ত্রণা ছিল। সেই যন্ত্রণায় কিছুটা হলেও মলম লাগল।’
আইএসএলের শুরুর দিকে সে ভাবে ছন্দে ছিলেন না ক্লেটন। সময় যত গড়িয়েছে, তত তিনি নিজের খোলস ছেড়ে বের হয়েছে। এই প্রসঙ্গে লাল-হলুদ অধিনায়ক বলেন, ‘মরশুমের প্রথম চার-মাস আমি ভালো খেলতে পারিনি। নিজেকে নিয়ে একেবারেই খুশি ছিলাম না। মাঝে দু’-তিন সপ্তাহের জন্য ছুটি পেয়ে নিজেকে নতুন করে তৈরি করে তুলেছি। স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। আরও ভালো খেলার সঙ্কল্প নিয়েছি। আমি জানতাম, যে কাজটা করছি সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোচ এবং সমর্থকেরা আমার উপরে বিশ্বাস রেখেছেন। তাই আমি জানতাম, আমি ঘুরে দাঁড়াব।’
সুপার কাপে সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছে। এবার কি আইএসএলের সোনার বুট তাঁর লক্ষ্য? ক্লেটনের স্পষ্ট জবাব, ‘আমি বরাবর গোল করতে ভালোবাসি। আগামী দিনেও তাই থাকবে। সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার ইচ্ছে সবারই থাকে। আমারও রয়েছে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।