বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগের ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষে চোটের কারণে দলে ছিলেন না লিওনেল মেসি। সেই চোট তাঁকে ভুগিয়েছে ইন্টার মায়ামির ম্যাচগুলোতেও। অনেকে তাই বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে দলে মেসির নাম দেখে একটু অবাকই হয়েছিলেন। এখনও অস্বস্তি থাকায় একাদশে না থাকলেও, মেসি ছিলেন রিজার্ভ বেঞ্চে। মাঠে নামেন ৫৩ মিনিটে। নজরও কাড়েন। তাঁর দল ১-০ জিতে মাঠও ছাড়ে। তবে অল্পের জন্য গোলটা পাওয়া হয়নি লিওর।
এদিকে একটি গোলে অ্যাসিস্ট করেছেন নেইমার। ম্যাচজুড়ে খেলেছেনও দারুণ। কিন্তু তার পরও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি ব্রাজিলীয় তারকা। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ব্রাজিলকে। ১-১ গোলে ড্র হয় ম্যাচ। সেই সঙ্গে থমকে গেল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ঘরের মাঠে ব্রাজিলের ১৫ ম্যাচের জয়রথ।
আর্জেন্তিনা বনাম প্যারাগুয়ে
বুয়েন্স এয়ারসে ম্যাচের শুরুতেই দর্শকদের মাতিয়ে দেন নিকোলাস ওতামেন্দি। ম্যাচের ৩ মিনিটের মাথায় কর্নার থেকে বল পান প্রায় ফাঁকা দাঁড়িয়ে থাকা ওতামেন্দি। দুর্দান্ত এক ভলিতে চোখ ধাঁধানো গোল ওতামেন্দির। আর্জেন্তিনা শুরুতেই গোল পাওয়ায় বড় ধাক্কা খায় প্যারাগুয়ে। এদিকে আর্জেন্তিনা শুরুতেই ম্যাচের রাশ নিজের হাতে নিয়ে ফেলে। রদ্রিগো ডি পল, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার এবং জুলিয়ান আলভারেজের সমন্বয়ে প্যারাগুয়ে প্রথমার্ধে কিছুটা কেঁপে গিয়েছিল। ৪২ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া ডি পলের শট পোস্ট কাঁপিয়ে ফিরে আসে। এ ছাড়া অ্যাটাকিং থার্ডে আর একটু মুন্সিয়ানা দেখাতে পারলেই, প্রথমার্ধেই ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত আর্জেন্তিনা। প্যারাগুয়ের গোলরক্ষকও দারুণ কিছু গোল বাঁচিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দশমীর চাপ- ভুবনেশ্বরে রাত সাড়ে ৯টায় মোহনবাগানকে AFC Cup-এর ম্যাচ খেলতে হবে
বিরতির পর অবশ্য কিছুটা ছন্দ ফিরে পায় প্যারাগুয়ে। ৫২ মিনিটে ম্যাচে সমতা ফেরানোর দারুণ এক সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি র্যামন সোসা। এর আগে সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে মেসি ওয়ার্ম আপ শুরু করলে দর্শকেরা তাঁর নাম ধরে উল্লাস শুরু করেন। ৫৩ মিনিটে মাঠে নামেন লিও। মাঠে নামার পর মেসিকে দেখে পুরোপুরি ফিট মনে না হলেও, তিনি কিন্তু নিজের কিছু ঝলক দেখাতে ভোলেননি মেসি। ৭৬ মিনিটে কর্নার থেকে নেওয়া মেসির ইনসুইঙ্গিং ক্রস আর একটু হলেই জালে জড়াত। অল্পের জন্য সেটি মিস হয়। পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। এর পর ইনজুরি টাইমে ফ্রি–কিকে মেসির শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। মেসি গোল না পেলেও, অবশ্য আর্জেন্তিনার জিততে কোনও সমস্যা হয়নি।
ব্রাজিল বনাম ভেনেজুয়েলা
অবশেষে থেমে গেল বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ঘরের মাঠে ব্রাজিলের ১৫ ম্যাচের জয়রথ। ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ১-১ ড্র করে ব্রাজিল। ঘরের মাঠে শুরু থেকেই দাপুটে ফুটবল খেলেছে ব্রাজিল। এদিন ৭১ শতাংশ বলের দখল রেখেছিল তারা। অন্য দিকে ২৯ শতাংশ বলের দখল ছিল ভেনেজুয়েলার। তবে ব্রাজিলের ফিনিশিং ব্যর্থতার জেরে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় নেইমরাদের।
ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ব্রাজিলের দখলে থাকলেও দুই দলই অবশ্য প্রথমার্ধে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। ২৫ গজ দূর থেকে নেইমারের শট বারের উপর দিয়ে বের হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত কোনও গোল ছাড়াই বিরতিতে যেতে হয় দুই দলকে। বিরতির পর নেইমারের দারুণ একটি শট ঠেকিয়ে দেন ভেনেজুয়েলার গোলরক্ষক। একটু পরই অবশ্য ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন গ্যাব্রিয়েল মাগালেস। নেইমারের কর্নার থেকে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আর্সেনাল তারকা। গোলের পর আত্মবিশ্বাসী ব্রাজিল চেষ্টা করে ব্যবধান বাড়ানোর। কিন্তু আর গোলের মুখ খুলতে পারেনি তারা। অন্য দিকে ভেনেজুয়েলাও একাধিকবার ব্রাজিল বক্সে ঢুকে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৮৫ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে সমতায় ফেরান ভেনেজুয়েলার এডোয়ার্ড ভেলো। এই গোলের পর ব্রাজিল চেষ্টা করেও আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। মাঠ ছাড়তে হয়েছে এর পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েই।
এই ড্রয়ের পর মাঠ ছাড়ার সময়ে আবার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে নেইমারকে। টানেলের ঢোকার মুখে নেইমারের মাথায় পপকর্ন ঢেলে দেন দর্শকেকা। এমন কী তাঁর মাথায় পপকর্নের প্যাকেটটিও ছুড়ে মারা হয়। এই ঘটনায় কয়েক মুহূর্তের জন্য থমকে দাঁড়াতে দেখা যায় নেইমারকে। এর পর রেগেমেগে কিছু বলতেও শোনা যায় তাঁকে। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবোর প্রকাশিত একটি ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে এই দৃশ্য।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।