ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (IPL) কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) জার্সিতে রিঙ্কু সিং ভালো পারফরম্যান্স করার সুবাদে প্রথমে ২০২৩ এশিয়ান গেমসের দলে সুযোগ পান। এর পরে তিনি আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্যও দলে সুযোগ পেয়েছেন। রিঙ্কুর সামনে এখন নিজেকে প্রমাণ করার বড় সুযোগ।
আইরিশদের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে ডাক পাওয়ার পর ২৫ বছরের বাঁ-হাতি তারকা দাবি করেছেন যে, এটি এখনও স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। রিঙ্কুু বলেছেন, ‘এটা ঠিক স্বপ্নের মতোই। তাই আমি তাড়াতাড়ি জাগতে চাই না।’
তিনি যোগ করেছেন, ‘এটি একটি অদ্ভূত অনুভূতি, যা আমি ভাষাযয় প্রকাশ করতে পারব না। আমি একেবারে শূন্য থেকে এই জায়গায় পৌঁছেছি। আমি অত্যন্ত আবেগপ্রবণ, এবং যত বারই আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলি, রীতিমতো কান্নাকাটি করি।’
রিংকুর যাত্রা পথটা একেবারে আলাদা। খুব সহজ ছিল না এই পথটা। আইপিএলের প্রথম তিন মরশুমে তিনি খুব কম প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন। মাত্র ৭৭ রান ছিল তাঁর ঝুলিতে। ২০২১ মরশুমে তিনি একটিও ম্যাচ খেলেননি। ২০২২ আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বে তিনি কয়েকটি ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন। তবে ২০২৩ আইপিএলে বদলে যায় তাঁর ভাগ্য। এক জন গেম-চেঞ্জার হিসেবে প্রমাণিত করেছিলেন নিজেকে। এবং তিনি ১৪৯.৫৩ স্ট্রাইক রেটে ৪৭৪ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: WTC Standings 2023-25: অজিরা হারায় স্বস্তি পেল ভারত-পাক, ইংল্যান্ড ঘাড়ে উঠল অস্ট্রেলিয়ার
রিঙ্কু বলেছেন, ‘আমি ছয় বছর ধরে কেকেআরের সঙ্গে রয়েছি। প্রাথমিক ভাবে আমি সুযোগও পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হই। দলের থাকাকালীন প্রথমের দিকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি মুম্বইয়ের কেকেআর অ্যাকাডেমিতে অভিষেক নায়ার স্যারের তত্ত্বাবধানে নিজের ব্যাটিং নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছি। সেই সমস্ত কঠোর পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘অন্য কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি হলে, নিয়মিত ব্যর্থ হওয়ার পরে আমাকে রাখত না। কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অভিষেক স্যার আমার মধ্যে এমন কিছু দেখেছিলেন, যেটা আমিও জানতাম না। আমি প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা নেটে ব্যাট করতাম এবং নতুন শট শিখতাম। আমার মনে হয়, এই তিন বছরে আমি একজন অলরাউন্ড ব্যাটসম্যান হয়েছি। আমি আইপিএলে ভালো করেছি, স্বীকৃতি পেয়েছি এবং তার জন্য এখন ভারতীয় দলে ডাক পেয়ে পুরস্কৃত হচ্ছি।’
দুর্দান্ত আইপিএলের সিজনের পরে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য রিঙ্কুকে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে নেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। কিন্তু তাঁকে দলে রাখা হয়নি। এই নিয়ে রিঙ্কু বলেছেন, ‘এটা কোনও বিষয় নয়। আমি আরও খারাপ সময় দেখেছি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে সুযোগ না পাওয়াটা আমাকে মোটেও হতাশ করেনি। নির্বাচন আমার হাতে নেই। আমি যা করতে পারি, তা হল রান করা, এবং আমি তা করছি।’
রিঙ্কু সব সময়েই ভারতের হয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কখনও-ই এটা নিয়ে খুব বেশি ভাবতেন না বলেই দাবি করেছেন। রিঙ্কু বলেছেন, ‘আমার মনে কুসংস্কার আছে যে, আমি যদি খুব বেশি চিন্তা করি, তবে জিনিসগুলি সব ঘেঁটে যায়। আমি বর্তমানে বাস করি এবং আমিও এভাবেই ব্যাট করে থাকি। লোকেরা আমাকে সেই পাঁচটি ছক্কা এবং এর পিছনে পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বাস্তবে কোনও পরিকল্পনা ছিল না। এটা আমার দিন ছিল, আর আমার প্রতিটা বল ব্যাটে-বলে হয়েছে। এবং আমি প্রতিটি বল হিট করেছি। এটা সবই ঈশ্বরের পরিকল্পনা, আর কিছু নয়।’
তিনি বলেছেন যে, তাঁর ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় শিক্ষা হল, কখনও হাল এবং স্বপ্ন ছাড়া উচিত নয়। তিনি যোগ করেছেন, ‘স্বপ্ন সত্যি হয়। তবে তার জন্য কখনও-ই হাল ছাড়লে চলবে না। জীবন ও ক্রিকেটে কোনও শর্টকাট নেই। আপনি যদি ক্রিকেট ভালোবাসেন, তবে পরিশ্রম করুন, পুরস্কার আসবেই।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।