ভারতের মতো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে সব সময়ে প্রতিভা থাকলেও, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া একেবারেই সহজ বিষয় হয় নয়। ইতিহাস বলছে, ভারতের অনেক খেলোয়াড়ই ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। কিন্তু ভারতীয় একাদশে জায়গা পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। সম্প্রতি মুম্বইয়ের তারকা ব্যাটসম্যান সরফরাজ খান, যিনি গত কয়েক বছর ধরে রঞ্জি ট্রফিতে অবিশ্বাস্য ছন্দে রয়েছেন, তাঁকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের আসন্ন দুই টেস্টের সিরিজের দল সুযোগ না দেওয়ায়, ভারতের দল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনা চলছে। অভিমন্যু ঈশ্বরণ আর একজন প্লেয়ার, যিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেললেও, জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য খুলছে না। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা তাঁদের পুরো জাতীয় দলের একটা সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় পুরো ক্যারিয়ার কাটিয়ে দিয়েছেন। এবং শেষ পর্যন্ত জাতীয় ক্যাপ অধরাই থেকে গিয়েছেন তাঁদের, তাঁর হতাশা নিয়েই ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। তবে সৌরাষ্ট্রের শেলডন জ্যাকসন, যাঁর এই বছর ৩৭ হয়ে গেল, তিনি এখনও হাল ছাড়েননি।
জ্যাকসন গত মরশুমে সৌরাষ্ট্রের হয়ে চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্স করেছিলেন। এবং ২০২২ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ৯০টি প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ এবং ৭৭টি লিস্ট-এ ম্যাচ খেলে জ্যাকসন ভারতীয় দলে এখনও সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। এবং গত বছর ভারতের 'এ'-দল থেকেও বাদ পড়েন তিনি। এবং এতে তিনি তীব্র হতাশা প্রকাশ করেছিলেন।
জ্যাকসন তাঁর অফিসিয়াল টুইটার প্রোফাইলে ২০২২ সালের অগস্টে লিখেছিলেন, ‘আমার বিশ্বাস করার এবং স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে যে, আমি যদি একটানা তিন মরশুমে পারফর্ম করে থাকি, তবে বয়স নয়, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আমি বাছাই হতে পারি। এই কথা শুনে ক্লান্ত যে, আমি একজন ভালো খেলোয়াড় এবং পারফর্মার কিন্তু আমার বয়স হয়েছে। আমার বয়স ৩৫, ৭৫ নয়।’
বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষার পরেও জ্যাকসন হাল ছেড়ে দেননি। স্পোর্টসকিডায় দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জ্যাকসন বলেছেন যে, তিনি তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন ভারতের তারকা দীনেশ কার্তিক এবং এমএস ধোনির কাছ থেকে। প্রসঙ্গত কার্তিক ৩৭ বছর বয়সে গত বছর টিম ইন্ডিয়াতে একটি অত্যাশ্চর্য প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। আর ধোনি ৪১ বছর বয়সেও ২০২৩ আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসকে রেকর্ড পঞ্চম বার শিরোপা জিতিয়েছেন।
জ্যাকসন বলেছেন, ‘আমি যখন দীনেশ কার্তিক এবং এমএস ধোনিকে দেখি, তখন আমি অনুপ্রাণিত হই। আমি কেকেআর-এ ওর (কার্তিকের) সঙ্গে ছিলাম এবং আমি ওর পুরো রূপান্তর দেখেছি। ও আমার কাছে একজন সত্যিকারের অনুপ্রেরণা।’
জ্যাকসন বলেছিলেন যে, যদি তিনি ভালো প্লেয়ার না হতেন, তবে ১০০টির কাছাকাছি প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচ খেলতেন না এবং ৪৯ গড়ে রানও করতে পারতেন না। তাঁর দাবি, ‘আপনি যদি সুযোগ না পান, তবে আপনি কোথায় প্রভাব ফেলবেন? আমি কখনই কারও নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে পারি না। আমি কেবল আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারি, কেন আমাকে বাছাই করা হয়নি। আমি কখনও-ই একজন নির্বাচককে ফোন করে জিজ্ঞেস করব না যে, আমাকে কেন বাছাই করা হয়নি?’
তিনি যোগ করেছেন, ‘যদি আমি যথেষ্ট ভালো প্লেয়ার না হতাম, তবে আমি ৯০-এর বেশি ম্যাচ খেলতে পারতাম না। গড় পঞ্চাশের কাছাকাছি থাকত না। লাল বলের পরিসংখ্যান এবং সাদা বলের পরিসংখ্যান দুটি কিন্তু আলাদা জিনিস।’ এই বছর জ্যাকসন আইপিএলে খেলেননি। তবে ঘরোয়া মরশুম শুরু হলে সৌরাষ্ট্রের হয়ে খেলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।