মহম্মদ শামি ও প্যাট কামিন্স। ছবি- আইসিসি টুইটার।
পরিকল্পনায় নয়, তফাৎ দেখা গেল প্রয়োগ কৌশলে। ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দু'দলের প্রথম ইনিংসকে পাশাপাশি রাখলে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে স্পষ্ট ফারাক দেখা যায়। ভারতীয় বোলাররা যে ভুল করেন প্রথম দিনে, অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা ভুল করেও সেই ভুল করেননি। একেবারে শুরু থেকে নিখুঁত লাইন-লেনথে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের যথার্থ পরীক্ষা নেন কামিন্স, বোল্যান্ড, গ্রিনরা। বলা বাহুল্য, ভারতের তারকাখচিত টপ অর্ডার অজি বোলারদের সেই চ্যালেঞ্জ সামলাতে ব্যর্থ।
প্রথম দিনে শামি, উমেশ, শার্দুলদের বোলিং দেখে কমেন্ট্রি বক্সে থাকা সৌরভ, শাস্ত্রী, গাভাসকররা বারবার মন্তব্য করেন যে, ওভালের পিচে যথাযথ জায়গায় বল রাখছেন না তাঁরা। পিচ ম্যাপ দেখিয়ে বিশেষজ্ঞরা বুঝিয়ে দেন, সফল হতে হলে ব্যাটসম্যানদের আরও একটু উপরে খেলানো উচিত।
অথচ উমেশরা এমন একটা লেনথে বল রাখছিলেন, যেখান থেকে অজি ব্যাটসম্যানরা বল খেলার সময় দোলাচলতায় ভুগছিলেন না মোটেও। বল স্টাম্পে আসবে না বুঝে হয় স্মিথ-ট্রেভিস খোলা মনে শট খেলেন। নতুবা নিশ্চিন্তে বল ছেড়ে দেন।
তবে অজি পেসাররা শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় বল রাখছিলেন, যেখান থেকে খেলব না ছাড়ব, এই দোলাচলতায় ভুগতে দেখা যায় গিল-পূজারাদের। অফ-স্টাম্পের সামান্য বাইরে থেকে বল ভিতরের দিকে অথবা বাইরের দিকে সুইং করাচ্ছিলেন বোল্যান্ডরা। এমন একটা লেনথে বল করছিলেন অজি পেসাররা, বল যাতে স্টাম্পের ঠিক মাথায় গিয়ে লাগে।
অর্থাৎ, বল যেখানে নড়চড়া করে, তেমন পিচে ব্যাটসম্যানদের বিব্রত করার জন্য আদর্শ লাইন-লেনথে ক্রমাগত বল করেন কামিন্সরা। তাতেই মেলে সাফল্য। শুভমন গিল ও চেতেশ্বর পূজারা বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন। বল গিয়ে লাগে অফ-স্টাম্পের ঠিক মাথায়। রোহিত শর্মা গতিতে পরাস্ত হন। এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন হিটম্যান।
শামিরা প্রথম দিনে একাধিকবার পরাস্ত করেন অজি ব্যাটসম্যানদের। তবে বল প্যাডে লাগলেও বেশিরভাগ সময়ে স্টাম্পের উপর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। তাই এলবিডব্লিউ আদায় করা সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে। কামিন্স এক্ষেত্রে তুলনায় ফুল লেনথে বল রাখায় এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন ভারত অধিনায়ক।
প্রথম দিনে ভারত শর্ট বলও যথাযথ ব্যবহার করতে পারেনি। মিচেল স্টার্ক যেভাবে বিরাট কোহলিকে আউট করেন, দেখিয়ে দেন কীভাবে টেস্টে শর্ট বল ব্যবহার করতে হয়। বলের লাইন থেকে ব্যাট সরাতে পারেননি কোহলি। কার্যত বাধ্য হয়ে ব্যাটের কানা লাগিয়ে বসেন বিরাট।
অবশ্য দ্বিতীয় দিনে ভারতীয় বোলারর নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যথাযথ বোলিং করেন। যার ফল মেলে তাঁদের। তবে ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংসে বড় রানের ভিত গড়ে ফেলেছে ততক্ষণে।
উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ইনিংসে ৪৬৯ রান তোলে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারত দ্বিতীয় দিনের শেষে তাদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৫১ রান সংগ্রহ করে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।